Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Dog

পার্ভো থেকে পথ কুকুরদের বাঁচাতে সাহায্যের আবেদন

এই ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরের রক্ত আমাশা হয়। যার ফলে মলত্যাগের সময়ে রক্ত বেরোয়।

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৩০
Share: Save:

বমি, রক্ত পায়খানার সঙ্গে জ্বর এবং মাঝেমধ্যেই খিঁচুনি। শহরের পোষ্য ও রাস্তার কুকুরদের এই সব লক্ষণ নিয়ে বেলগাছিয়ার পশু ক্লিনিক এবং ধাপায় কলকাতা পুরসভার ডগ পাউন্ডে সপ্তাহখানেক ধরে ভিড় করছেন পশুপ্রেমীরা। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই সব লক্ষণের কারণ হল পার্ভো। ভাইরাসঘটিত রোগটি কুকুরের মধ্যে হয়। যা মূলত ফেব্রুয়ারি মাসেই বেশি দেখা যায়। তবে রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু হলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সালের শেষে পার্ভোর সংক্রমণ প্রথম নজরে আসে। ১৯৭৮ সালের পর থেকে বছর দুয়েক বিশ্বের নানা দেশে পার্ভো কার্যত মহামারির আকার নেয়। তবে প্রায় ছ’মাস বয়স পর্যন্ত কুকুরের মধ্যে পার্ভো-র সংক্রমণ বেশি দেখা যায়।

এই ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরের রক্ত আমাশা হয়। যার ফলে মলত্যাগের সময়ে রক্ত বেরোয়। শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে যাওয়ায় দুর্বল হয়ে যায় রোগী। সেই সঙ্গে জ্বর আসে, বমিও হয়। কুকুরের মধ্যে এই সব লক্ষণ হলেই বুঝতে হবে পার্ভো ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অনেক সময়ে বদহজম থেকেও বমি হতে পারে। তাই শুধু বমি হলে অযথা আতঙ্কিত হতে হবে না। সঙ্গে অন্য লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি না, সে দিকে নজর রাখতে হবে। আরও কিছু লক্ষণ দেখলেই দ্রুত পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন বেলগাছিয়া প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাক্তারেরা। তবে তাঁরা আশ্বস্ত করছেন, পার্ভোর লক্ষণ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে চিকিৎসা শুরু করলে রোগী ভাল হয়ে যাবে।

বেলগাছিয়া প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের চিকিৎসক চন্দন লোধ বলেন, “সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে কুকুরের মধ্যে পার্ভো ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ে। এখন বেলগাছিয়ায় রোজ ৮-১০টি কুকুর এই সব লক্ষণ নিয়ে আসছে।”

একই ছবি কলকাতা পুরসভার ধাপার ডগ পাউন্ডে। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পার্ভোর লক্ষণ নিয়ে আসা দিনে গড়ে ৫-৬টি রাস্তার কুকুরের তাঁরা চিকিৎসা করেন। জন্মের ছ’সপ্তাহের মধ্যে পার্ভো ভাইরাসের প্রতিষেধক দিলে রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এই প্রতিষেধক দিতে প্রতি কুকুরের জন্য প্রায় পাঁচশো টাকা খরচ পড়ে।

কিন্তু বাড়ির পোষ্য কুকুরকে এই পরিষেবা দেওয়ার সামর্থ্য থাকলেও শহরের প্রায় আড়াই লক্ষ পথকুকুরের কাছে এই প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়ার পরিকাঠামো কি আছে কলকাতা পুরসভার? পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের স্বীকারোক্তি, “রাস্তার কুকুরদের বিনামূল্যে প্রতিষেধক দেওয়ার মতো পরিকাঠামো কলকাতা পুরসভার নেই।”

প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের মতে, “এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে। তবেই পথকুকুরদের পার্ভোর সংক্রমণ থেকে বাঁচানো সম্ভব। ওদের জন্য সকলের কাছে এগিয়ে আসার আর্জি রইল।”

অন্য বিষয়গুলি:

Dog Street Dogs
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy