Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Hilsa Fish

দিঘা এবং ডায়মন্ড হারবার মোহানায় টন টন ইলিশ মিললেও কলকাতার বাজারে দাম নিয়ে আক্ষেপ ক্রেতাদের

বাদলা দিনে পাতে ইলিশের জোগান তেমন না থাকায় অন্য মাছের দিকে বাধ্য হয়েই ঝুঁকতে হচ্ছিল বাঙালিকে। সপ্তাহ দুয়েক যাবৎ শহরের কয়েকটি বাজারে অল্প কিছু ইলিশ মিললেও দামে কার্যত হাত পুড়ছিল।

An image of the Hilsa Fish

রুপোলি: মানিকতলা বাজারে ইলিশের বিকিকিনি। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ০৭:১৯
Share: Save:

মাছে-ভাতে বাঙালির আক্ষেপ তা হলে কিছুটা হলেও মিটতে শুরু করল! রবিবারের সকালে মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরির মধ্যে শহরের বাজারে বাজারে ইলিশের জোগান অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিল। দাম ওমান নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ থাকলেও পর্যাপ্ত ইলিশের জোগান হাসি ফোটাল ব্যাগ হাতে বাজার ফেরত বাঙালির মুখে।

সপ্তাহখানেক হল, শহরে বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কিন্তু বাদলা দিনে পাতে ইলিশের জোগান তেমন না থাকায় অন্য মাছের দিকে বাধ্য হয়েই ঝুঁকতে হচ্ছিল বাঙালিকে। সপ্তাহ দুয়েক যাবৎ শহরের কয়েকটি বাজারে অল্প কিছু ইলিশ মিললেও দামে কার্যত হাত পুড়ছিল। তবে গত কয়েক দিন ধরে দিঘা এবং ডায়মন্ড হারবার মোহনায় মৎস্যজীবীদের জালে টন টন ইলিশ ওঠায় কলকাতার বাজারগুলিতে শেষমেশ পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা মিলছে। এমনকি, এ দিন বাজারে মরসুমের সব থেকে বেশি ইলিশ ছিল বলেও দাবি করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। আগামী কয়েক দিন ইলিশের এই জোগান বজায় থাকবে বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা।

এ দিন সকাল থেকে মানিকতলা, হাতিবাগান, গড়িয়াহাট, কসবা, ভবানীপুর, আশুবাবুর বাজার-সহ শহরের একাধিক বাজারে দেখা মিলেছে পর্যাপ্ত ইলিশের। ওজনের রকমফেরে দামও প্রতিটি বাজারে ছিল কার্যত একই। এ দিন বাজারে ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের মাছের জোগান ছিল সব চেয়ে বেশি। কেজিপ্রতি ওই ওজনের ইলিশ এ দিন বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। অন্য দিকে, ৫০০ গ্রামের আশপাশের ওজনের ইলিশের দাম ছিল আরও কম। মানিকতলা বাজারে এ দিন সেই ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকা কেজিতে। তবে বড় মাপের ইলিশের দাম ছিল অনেকটাই বেশি। এক কেজি ওজনের ইলিশ কিনতে ক্রেতাকে প্রায় ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা খসাতে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

তবে ঘাটতি মিটিয়ে জোগান বাড়লেও দাম সে ভাবে না কমায় আক্ষেপ যাচ্ছে না ক্রেতাদের। এমনকি, মাছের স্বাদ কেমন হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে তাঁদের। হাতিবাগান বাজারে ইলিশ কিনতে আসা সাম্য অধিকারী বলেন, ‘‘যা দাম, তাতে এখন ইলিশ খাওয়া তো বিলাসিতা মনে হচ্ছে! দাম কমেছে তো নামমাত্র। আগেবাজারে ইলিশের দেখা মিলছিল না, আর এখন দেখা মিললেও দামের ঠেলায় হাত দেওয়া যাচ্ছে না।’’ প্রায় একই বক্তব্য কসবার বাসিন্দা মৌসুমী পাত্রের। তাঁর কথায়, ‘‘পকেট ফাঁকা করে ইলিশ তো কেনা হল, কিন্তু স্বাদ যে কী হবে, সেটাই ভাবছি। এত টাকার ইলিশে যদি স্বাদ-গন্ধ কিছু না থাকে, তা হলে টাকা নষ্ট ছাড়া তো কিছুই হবে না।’’

ব্যবসায়ীরা যদিও সপ্তাহখানেকের মধ্যে দাম নাগালের মধ্যে আসবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন। আশুবাবুর বাজারের মাছ ব্যবসায়ী অসীম দাস বলেন, ‘‘সবে ইলিশ আসা শুরু হয়েছে। চাহিদা তুঙ্গে থাকায় প্রথম ক’দিন দাম একটু চড়া রয়েছে। তবে আমদানি চলতে থাকলে ক’দিনের মধ্যে দাম কমে যাবে।’’ পাতিপুকুর পাইকারি মাছ বাজারের এক ব্যবসায়ী গোপাল সরকার যদিও বলছেন, ‘‘এখন সব জিনিসেরই দাম চড়া। বরফ থেকে শুরু করে মজুতের অন্যান্য জিনিসের দামও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। তাই আড়ত থেকে গত বছরের তুলনায় একটু চড়া দামেই মাছ কিনতে হচ্ছে।’’

তাই মরসুমের শুরুর দিকে বাজারে ইলিশের জোগান থাকলেও দামের আঁচে কিছুটা হলেও ম্লান হয়েছে আমজনতার হাসি।

অন্য বিষয়গুলি:

Hilsa Fish Fish Market Price Hike Monsoon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE