সম্বুদ্ধ ঘোষ
সাড়ে চার বছরের ‘অটিস্টিক’ শিশু সম্বুদ্ধ ঘোষের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশকে আরও তদন্ত (ফারদার ইনভেস্টিগেশন) করে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট শুভদীপ চৌধুরী। গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর কমান্ড হাসপাতালের ভিতরে জলাশয়ে পড়ে যায় ওই ছাত্র। তাকে ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।
পুলিশ গত বছরের জুনে চার্জশিট দিলেও সম্বুদ্ধের বাবা শুভজিৎবাবু তদন্তে সন্তুষ্ট না হয়ে ‘না-রাজি পিটিশন’ দায়ের করেন। সেই মামলার শুনানি শেষ হয় গত বছরের ১২ ডিসেম্বর। সোমবার মামলার রায় দেন বিচারক।
শুভজিৎবাবুর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা জানান, পুলিশ অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করলেও স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়নি। তাই সম্বুদ্ধের বাবা আদালতে ওই পিটিশন দায়ের করেন।
সম্বুদ্ধের বাবা জানান, সেনা অফিসারদের স্ত্রীদের দ্বারা পরিচালিত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্কুলে পড়ত তাঁর ছেলে। ২০ ফেব্রুয়ারি স্কুলের স্পোর্টস ছিল রিমাউন্ট রোডে সেনার মাঠে। সেখান থেকেই তাঁর ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কমান্ড হাসপাতালের ভিতরের স্কুলে। অফিস যাওয়ার আগে তিনিও স্কুলে ঢুকেছিলেন। স্কুলবাসেই বাড়ি পাঠানোর কথা ছিল তাঁর ছেলেকে। বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ তিনি স্কুল থেকে অফিসের উদ্দেশে রওনা হন। সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁকে ফোন করে ফিরে আসতে বলা হয়। সেখানে জানানো হয়, তাঁর ছেলে স্কুলের ভিতরে জলাশয়ে পড়ে গিয়েছে।
শুভজিৎবাবু জানান, পরের দিন আলিপুর থানায় স্কুলের ভাইস প্রেসিডেন্ট সর্বাণী মিত্র, প্রিন্সিপাল সুদেষ্ণা বসু, ক্লাসটিচার কাকলি চৌধুরী ও আয়া-সহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
তাঁর আইনজীবী জানান, বিচারক তাঁর রায়ে আরও তদন্তের নির্দেশ দিয়ে একাধিক পর্যবেক্ষণ করেছেন। কয়েকটি বিষয়ের উল্লেখ নেই চার্জশিটে। যেমন, যখন দুর্ঘটনাটি ঘটে, তখন স্কুলের সিসি ক্যামেরা কেন বন্ধ ছিল। অটিস্টিক শিশুদের সব সময়ে নজরে রাখা দরকার। কিন্তু তখন ক্লাস টিচার ভাইস কেন প্রিন্সিপালের ঘরে ছিলেন। জলাশয় কেন শীতের শেষেও ভর্তি ছিল, কে তার দেখাশোনা করত, দেখভালকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কি না, তারও উল্লেখ নেই। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সম্বুদ্ধের বাবার গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করায়নি পুলিশ।
বিচারকের নির্দেশ, ৩০ মার্চের মধ্যে আলিপুর থানার ওসি বা সম পদমর্যাদার কোনও অফিসার আরও তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট পেশ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy