Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Nabanna Abhijan

পার্শ্বশিক্ষকদের ‘নবান্ন অভিযান’ ঘিরে তুলকালাম

এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পার্শ্বশিক্ষকেরা রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে জড়ো হতে শুরু করেন।

ধুন্ধুমার: অবস্থানে পার্শ্বশিক্ষকেরা।

ধুন্ধুমার: অবস্থানে পার্শ্বশিক্ষকেরা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৪৯
Share: Save:

স্থায়ীকরণ ও নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো চালু করার দাবিতে পার্শ্বশিক্ষকদের নবান্ন অভিযান ঘিরে শুক্রবার ধুন্ধুমার বাধল রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে। পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই আন্দোলন করছিলেন। পুলিশ বিনা প্ররোচনায় তাঁদের উপরে লাঠি চালায় এবং বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। যদিও পুলিশ লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, আন্দোলনকারীদের শুধু সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় ৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হলেও বিকেলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।


এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পার্শ্বশিক্ষকেরা রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে জড়ো হতে শুরু করেন। পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, ‘‘প্রায় দশ হাজার পার্শ্বশিক্ষকের রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ ধরে নবান্ন অভিযান করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল। পুলিশ জানায়, নবান্ন অভিযান করার দরকার নেই। দু’জন প্রতিনিধির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দেখা করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’ ভগীরথবাবুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁরা বিকেল ৩টে পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের আর এক যুগ্ম আহ্বায়ক মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘৩টে বেজে গেলেও ওঁরা আমাদের কোনও প্রতিনিধিকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য ডাকেননি।’’


সূত্রের খবর, এর পরেই পার্শ্বশিক্ষকদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। তাঁরা রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের দিকে যাত্রা শুরু করেন। এক আন্দোলনকারী জানান, তাঁরা রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। পার্শ্বশিক্ষকেরা সেই ব্যারিকেড টপকে যেতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুলিশের লাঠির আঘাতে এবং ধস্তাধস্তিতে সাত জন পার্শ্বশিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যেই ভগীরথবাবু ও মধুমিতাদেবী-সহ বেশ কয়েক জন পার্শ্বশিক্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলে দেয়।


এর পরে পার্শ্বশিক্ষকেরা রাস্তায় বসেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁরা জানান, ধৃত আন্দোলনকারীদের ছাড়া না হলে তাঁরাও রাস্তা থেকে উঠবেন না। বিকেলের দিকে খবর আসে, ভগীরথবাবু ও মধুমিতাদেবী-সহ সবাইকেই ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এই খবর শোনার পরে পার্শ্বশিক্ষকেরা ফিরে যান সল্টলেকের বিকাশ ভবনে, তাঁদের বিক্ষোভ মঞ্চে। মধুমিতাদেবী জানান, সল্টলেকে শুক্রবার তাঁদের বিক্ষোভ অবস্থান ৫০ দিনে পড়ল।


এ দিন তাঁর বাজেট বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন তিন শতাংশ বাড়ছে এবং ৬০ বছরে অবসরের পরে প্রত্যেকে এককালীন তিন লক্ষ টাকা করে পাবেন।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় সন্তুষ্ট নন পার্শ্বশিক্ষকেরা। ভগীরথবাবু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকে ঘোষণা করেছিলেন, ছ’মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে পার্শ্বশিক্ষকদের স্থায়ী করে বেতন কাঠামো তৈরি করা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হওয়া পর্যন্ত আমরা বিক্ষোভ-আন্দোলন থামাব না।’’ ভগীরথবাবু জানান, যাঁরা প্রাথমিকের পার্শ্বশিক্ষক, তাঁরা বেতন পান ৮৮০০ টাকা। যাঁরা উচ্চ প্রাথমিকে পড়ান, তাঁরা হাতে পান ১১,৩৩০ টাকা। এত কম টাকায় সংসার চলে না। তাই তাঁরা বাধ্য হয়েই রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Para Teachers Nabanna Abhijan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE