তিলজলা কাণ্ডে হিংসা রোখার সময় পুলিশের মাথায় হেলমেট। ফাইল চিত্র।
এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতিটি থানার হাতেই কাঁদানে গ্যাসের বন্দুক, কাঁদানে শেল ও গ্রেনেড দিয়েছে লালবাজার। কিন্তু তার পরিমাণ পর্যাপ্ত কি না, তা পর্যালোচনা করে দেখতে ডিসি-দের নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। সোমবার বিভিন্ন থানায় পাঠানো নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, থানাগুলিতে পুলিশকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত ঢাল ও হেলমেট রয়েছে কি না, তা-ও দেখতে হবে। আইনশৃঙ্খলার অবনতির মতো পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রতিটি ডিভিশনে ডিসি-র ওই বিশেষ বাহিনী যাতে প্রস্তুত থাকে, তা-ও নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
লালবাজার সূত্রের খবর, শুধু কাঁদানে গ্যাসের বন্দুক বা শেল ঠিক রয়েছে কি না, তা দেখার পাশাপাশি সেগুলি ব্যবহারের জন্য বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপালকে (প্রশিক্ষণ) প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের একাংশের মতে, সোমবার তিলজলায় নাবালিকা-খুনের প্রতিবাদে উন্মত্ত জনতার বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ যে ভাবে নাকানিচোবানি খেয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত।
পুলিশ সূত্রের খবর, তিলজলার এক নাবালিকাকে অপহরণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বন্ডেল গেট সংলগ্ন তিলজলা এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে প্রথমে কয়েকশো লোক বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তা থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বেলা ১২টা থেকে বন্ডেল গেটে অবরোধ শুরু হয়। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন বিভিন্ন থানার ওসি এবং বাহিনীর সদস্যেরা। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হতে থাকে।
দুপুর ২টো নাগাদ এক জন ডিসি-র নেতৃত্বে অবরোধ তোলার কাজ শুরু হলে বিক্ষোভকারীরা ইট, পাথর ছুড়তে শুরু করে। অভিযোগ, সে সময়ে লাঠি থাকলেও ঢাল বা কাঁদানে গ্যাস সঙ্গে ছিল না বাহিনীর। অনেক পুলিশকর্মীর মাথায় হেলমেটও ছিল না। পুলিশের একাংশের মতে, এর ফলে প্রাথমিক ভাবে বিপাকে পড়তে হয় তাদের। ঢাল, লাঠি ও পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁদানে গ্যাস— কিছুই সঙ্গে না থাকায় এক সময়ে পুলিশকে ঘটনাস্থল থেকে সরে যেতে হয়। ফলে পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে থাকে। পুলিশের গাড়ি ও কিয়স্কে ভাঙচুর করা হয়। বন্ডেল সেতুর উপরে একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। কিছু ক্ষণ ধরে ওই তাণ্ডব চলার পরে অবশেষে যুগ্ম নগরপাল (ট্র্যাফিক) রূপেশ কুমারের নেতৃত্বে ঢাল, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে সেখানে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী এবং তারা বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করতে শুরু করে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। এর জেরে কিছু ক্ষণের মধ্যেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যান বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশের একাংশের মতে, বাহিনী যদি প্রথম থেকেই প্রস্তুত হয়ে ঘটনাস্থলে যেত, তা হলে পরিস্থিতির এতটা অবনতি হত না। তাই মনে করা হচ্ছে, তিলজলার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির জন্য থানাগুলিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল, বন্দুক, ঢাল ও হেলমেট নিয়ে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। এমনিতেই থানাগুলির কাছে থাকা কাঁদানে বন্দুকের সংখ্যা কত, তার গ্যাস শেলের মেয়াদ কবে শেষ হচ্ছে— প্রতি বছর তার হিসাব পাঠাতে হয়। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে বাহিনীকে সব কিছু নিয়ে তৈরি থাকার বার্তা দিল লালবাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy