টালা সেতুতে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় অসুবিধার মুখে পড়েছেন অনেকেই। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবারের পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা ছিল সোমবার। তবে টালা সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর প্রথম সোমবার যান চলাচল অনেকাংশেই স্বাভাবিক রাখতে পারল কলকাতা পুলিশ।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন ছোট গাড়ির সংখ্যা রাস্তায় অনেক বেশি হবে ধরে নিয়েই আশঙ্কা ছিল, অফিসের ব্যস্ত সময়ে ব্যাপক যানজট হতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই হাতে অনেকটাই বেশি সময় নিয়ে বেরিয়েছিলেন অনেক অফিসযাত্রী। একই আশঙ্কা ছিল কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদেরও। তাই, সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছিলেন শীর্ষ পুলিশ কর্তারা।
এ দিন ব্যাপক কোনও জট না হলেও, যান চলাচল মন্থর ছিল কিছু নির্দিষ্ট অংশে। উত্তরমুখী যান চলাচলের ক্ষেত্রে ভূপেন বোস অ্যাভিনিউতে আগের থেকে অনেক বেশি সময় সিগন্যালে আটকে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন গাড়িচালকরা। একই রকম ভাবে কাশীপুর রোড এবং বেলগাছিয়া সেতু থেকে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় পর্যন্ত আর জি কর রোডেও যানের গতি শ্লথ ছিল বলে অভিযোগ যাত্রী ও চালকদের। বিষয়টি অস্বীকার করেননি ট্রাফিকের শীর্ষ কর্তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছিলেন শীর্ষ পুলিশ কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
সকাল থেকেই রাস্তায় নামেন ডিসি ট্রাফিক রূপেশ কুমার, যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) সন্তোষ পান্ডে এবং ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত নগরপাল ডিপি সিংহ। অফিসের ব্যস্ত সময়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে চলে আসেন বিশেষ কমিশনার জাভেদ শামিমও। এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘আমরা সমস্যার জায়গাগুলো চিহ্নিত করছি। প্রায় দেড়শো জনের অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যাতে দ্রুত পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।”
আরও পড়ুন: এলআইসি শেয়ারের প্রতিবাদে পথে কর্মচারীরা, কাল কর্মবিরতি দেশ জুড়ে
গাড়ির চাপের সঙ্গে যাতে সিগন্যালের সময়ের সামঞ্জস্য রাখা যায়, তার জন্য অধিকাংশ জায়গাতেই এ দিন অটোমেটিক সিগন্যালের বদলে ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘চিড়িয়ামোড়, বেলগাছিয়া-দত্তবাগান মোড় এবং বাগবাজার মোড়ে সিগন্য়ালিং ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।” আর জি কর হাসপাতালগামী বা সেখান থেকে বেরনো অ্যাম্বুল্যান্স যাতে যানজটে না পড়ে, সে জন্য আর জি কর রোড থেকে সরাসরি কলকাতা স্টেশনে যাওয়া আপাতত বন্ধ রেখেছে পুলিশ। কলকাতা স্টেশনগামী গাড়ি এপিসি রোড দিয়ে ক্যানাল সার্কুলার রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে কলকাতা স্টেশন ঢোকার জন্য আর জি কর রোডে যে যান জট তৈরি হয়, তা আটকানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি পুলিশ কর্তাদের।
আরও পড়ুন: সামিদার মৃত্যু দেখেও প্রতিবাদে অনড় পার্ক সার্কাস
তবে, এ দিন অসুবিধার মুখে পড়েন পথচারীরা। যাঁরা টালা সেতুতে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ার পর থেকেই পায়ে হেঁটে পারাপার করছিলেন, তাঁরা এ দিন বিক্ষোভও দেখান অবিলম্বে পথচারীদের জন্য ফুট ওভারব্রিজ তৈরির দাবিতে। পুলিশও স্বীকার করে ফুট ওভারব্রিজের প্রয়োজনীয়তা। লালবাজার সূত্রে খবর, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে একটি ফুটব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে পথচারীদের কথা ভেবে। তবে কবে পর্যন্ত তা তৈরি হবে তা নিয়ে কোনও তথ্য নেই লালবাজারের কাছে।
ট্রাফিক পুলিশের কর্তাদের দাবি, পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল পুরো বন্ধ করে দেওয়ায় অনেকটাই চাপ কমেছে টালা সেতু সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে। একই সঙ্গে, টালা সেতু যে বন্ধ তা বেশির ভাগ মানুষের জানা থাকায় এ দিন সুবিধাও হয়েছে বলে মনে করেন ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা। তাঁদের একজন বলেন, ‘‘শনিবার অনেকেই সেতু খোলা মনে করে পাইকপাড়া মোড় ছাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা ইউ টার্ন করে ফেরার জন্য অনেকটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল।”
এ দিন দমদম রোড, নর্দার্ন অ্যাভিনিউ এবং রাজা মণীন্দ্র রোড ধরে শ্যামবাজারমুখী যান অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক গতিতে চলেছে। তবে এ দিনও শীর্ষ পুলিশ কর্তারা ইঙ্গিত দেন যে, লকগেট উড়ালপুল দ্বিমুখী ভাবে যান চলাচলের উপযুক্ত নয়। যতটা প্রশস্ত হলে দ্বিমুখী যান চলাচল করা সম্ভব লকগেট উড়ালপুল তার থেকে অনেকটা অপ্রশস্ত। ফলে, আপাতত লকগেট ফ্লাইওভারে একমুখী ভাবেই যান চলাচল করবে।
এ দিন পুলিশ কর্তারা জানান, মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার পরেই রয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক। শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের এলাকায় ২০ টি মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ১১ টি। লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার সময় সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোর রাস্তায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হবে যাতে যানজটে আটকে পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি না হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy