Advertisement
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
Acupuncture

ডাক্তারের অভাবে ধুঁকছে সরকারি আকুপাংচার বিভাগ

কলকাতায় রাজ্য সরকারের ‘ক্লিনিক্যাল আকুপাংচার ইনস্টিটিউট’-এর তিনটি শাখা রয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২০ ০২:০৬
Share: Save:

রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে যে এই বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি পাওয়া যায়, তা অনেক রোগীরই অজানা। চিকিৎসকদের অভিযোগ, এই পরিষেবা নিয়ে প্রচারে আগ্রহ নেই সরকারের। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসকও। ফলে কলকাতায় সরকারি স্তরে আকুপাংচার পরিষেবা কার্যত বন্ধ হওয়ার মুখে। স্বাস্থ্য ভবনে একাধিক বার চিঠি এবং আলোচনার পরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ।

কলকাতায় রাজ্য সরকারের ‘ক্লিনিক্যাল আকুপাংচার ইনস্টিটিউট’-এর তিনটি শাখা রয়েছে। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে মূল শাখার নাম বি কে বসু আকুপাংচার ইনস্টিটিউট। সেখানে অধিকর্তা-সহ সাকুল্যে দু’জন চিকিৎসক। কিছু দিনের মধ্যেই তাঁদের অবসর নেওয়ার কথা। অন্য দু’টি শাখা রয়েছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং শম্ভুনাথ পণ্ডিত মেডিক্যাল কলেজে। চিকিৎসকের সংখ্যা সেখানে মাত্র এক জন করে।

শম্ভুনাথ হাসপাতাল সূত্রের খবর, হাসপাতাল ভবনের সংস্কারের জন্য আকুপাংচার বিভাগকে সরানো হলেও বিকল্প জায়গা দেওয়া হয়নি। ভবনের নতুন নকশাতেও ব্রাত্য থেকে গিয়েছে এই বিভাগ। ফলে তিন-চার মাস পুরোপুরি বন্ধ ছিল কেন্দ্রটি। পরে একটি ঘর মিললেও নির্মাণকাজ শেষ হলে বিভাগটি আদৌ থাকবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। রোগী সংখ্যাও প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৯-১০ জনে। চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও কাজ চালানো দুষ্কর। লোকাভাবে ধুঁকছে এনআরএসের কেন্দ্রটিও। বর্তমানে সেখানে দিনে মাত্র ১৫-২০ জন রোগীকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয় একজন চিকিৎসকের পক্ষে। রাজ্য জুড়ে সরকারি হাসপাতালে মোট ২৮টি আকুপাংচার ক্লিনিকের অনেকগুলিই চিকিৎসকের অভাবে বন্ধ।

অথচ চিকিৎসকদের দাবি, ব্যথা, বাত, হাঁপানি, প্যারালিসিস থেকে শুরু করে ক্রনিক রোগ, স্ত্রীরোগ, মাইগ্রেন, সাইনুসাইটিসের মতো বহু রোগে এই চিকিৎসা ভাল ফলদায়ী। দেশে প্রথম এই রাজ্যেই আকুপাংচারকে স্বীকৃতি দেয় প্রশাসন। ১৯৮৭ সালে‌ শম্ভুনাথের কেন্দ্র, তার পরে এনআরএস ও ১৯৯৬ সালে বিকে বসু ইনস্টিটিউট চালু হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কয়েকটি শয্যা, সূচ এবং একটি বিশেষ গাছের পাতা হলেই অতি অল্প খরচে এই চিকিৎসা করা সম্ভব। এক প্রবীণ আকুপাংচার বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘কত বার স্বাস্থ্য ভবনকে জানিয়েছি। কিন্তু ওরা জানায়, চিকিৎসকেরা এই প্রশিক্ষণে আগ্রহী নন। আবার কখনও বলে, চিকিৎসকের সংখ্যা কম। তাই এই বিভাগে চিকিৎসক দিয়ে তারা নষ্ট করতে চায় না।’’

সরকারি আকুপাংচার ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা হীরালাল সামন্ত এ ব্যাপারে বলছেন, ‘‘অনেক বার স্বাস্থ্য ভবনে জানিয়েও লাভ হয়নি। রোগীরা হা-পিত্যেশ করে থাকেন। কিন্তু সীমিত লোকবলের কারণে তাঁদের পরিষেবা দিতে পারছি না। অথচ এই চিকিৎসার প্রচুর সম্ভাবনা আছে।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সমস্যা সম্পর্কে জানি। একাধিক বার বৈঠক করেছি। চিকিৎসকদের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে, কী ভাবে এই চিকিৎসাকে সরকারি স্তরে ভাল ভাবে ফিরিয়ে আনা যায়। প্রচার চালানোর কথাও ভাবা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Acupuncture Health Doctors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy