সঞ্চয়িতা যাদব
সাজা ঘোষণার ঠিক আগে দোষ স্বীকার করেছিল অ্যাসিড-হামলায় দোষী সাব্যস্ত যুবক। কিন্তু ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক মিন্টু মল্লিক তাঁর সিদ্ধান্তেই অটল থাকলেন। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দমদমের শেঠবাগানের বাসিন্দা সঞ্চয়িতা যাদবের মুখে অ্যাসিড ছোড়ার ঘটনায় সোমবার দোষী সৌমেন সাহার ১৪ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করলেন বিচারক। সেই সঙ্গে এক লক্ষ টাকার জরিমানাও ঘোষণা করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে সঞ্চয়িতার জন্য জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকেও প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বিবেচনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে সঞ্চয়িতা তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেও বিপর্যয়ের পরে আরও সাহায্য তাঁর প্রাপ্য বলে মনে করছেন বিচারক।
অ্যাসিড আক্রান্তদের সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েক জনের কপালে শিকে ছিঁড়েছে। আইন সংশোধন করে অ্যাসিড হামলার ঘটনায় সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন হওয়ার পরে এই প্রথম কোনও অ্যাসিড-মামলায় সাজা ঘোষণা হল। এই মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী সত্যব্রত দাস বলেন, “হয়তো আসামির বয়স ৩৪ বছর বলেই তাঁকে যাবজ্জীবন সাজা দেননি বিচারক। তবে ১৪ বছরের থেকে সাজা কমাতে না চেয়ে সমাজে এই ধরনের অপরাধ যে কত মারাত্মক, সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি।”
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফেও আইনি সহায়তার জন্য সঞ্চয়িতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দুই আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ দে এবং অঙ্কন বিশ্বাস। অঙ্কন বলেন, “আসামির পরিবার জরিমানার টাকা দিতে পারবে না বলেছিল। কিন্তু সামাজিক বার্তা দিতেই বিচারক এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।”
এ দিন রায় ঘোষণার সময়ে এজলাসে হাজির ছিলেন সঞ্চয়িতা। অ্যাসিড হামলার জেরে ডান চোখ খোয়াতে হয়েছে তাঁকে, মুখে সাতটি অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছে। তবু এ দিন তাঁর চোখেমুখে ছিল পরিতৃপ্তির ছাপ। গত বছরই বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করেছেন সঞ্চয়িতা। একটি বেসরকারি সংস্থায় প্রান্তিক মানুষদের মানবাধিকার নিয়েও কাজ করেন তিনি। এ দিন রায়ের পরে সঞ্চয়িতা বলেন, “আমার লড়াই বৃথা যায়নি বলেই মনে হচ্ছে। আশা জাগছে, হয়তো আমার মতো অন্য অ্যাসিড আক্রান্তেরাও সুবিচার পাবেন। তাঁদের জন্য আমাদের লড়াই চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy