প্রতীকী ছবি।
বারুইপুর আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে শুক্রবার দুপুরে চলছিল শুনানি। সেখানেই নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার একটি বোমাবাজির মামলায় শাহজাহান মোল্লা নামে এক অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেন তদন্তকারী অফিসার। বিচারক তাঁর বক্তব্য শুনছিলেন, এমন সময়ে হঠাৎ হইচই পড়ে যায় আদালতকক্ষে। দেখা যায়, এজলাসের কোর্ট লকআপের মধ্যেই লোহার গরাদের সঙ্গে গলায় লুঙ্গির ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়ার চেষ্টা করছেন বছর তিরিশের শাহজাহান! এজলাসে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা ছুটে গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে গলায় ফাঁস লাগাতে পারলেও শাহজাহানের শ্বাসরোধ হয়নি বলেই জানান চিকিৎসকেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ক্যানিং (পূর্ব) বিধানসভার দেউলি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা শাহজাহানের বিরুদ্ধে একাধিক থানা এলাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ রয়েছে। তবে এ দিন হাসপাতালে তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা। সেই কারণে ভোটের ফল বেরোনোর পরেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।’’
যদিও বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন। কোনও মিথ্যে মামলা দায়ের করা হয়নি। আদালতে শাহজাহানের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’
কেন আদালতে এমন কাণ্ড ঘটাতে যাচ্ছিলেন শাহজাহান? হাসপাতালে তিনি জানান, গত ২ মে তিনি ভাঙড় থানার একটি মামলায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তার পর থেকে জীবনতলা, ক্যানিং, বকুলতলা, নরেন্দ্রপুর— একের পর এক থানায় তাঁর বিরুদ্ধে বোমাবাজির মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ভোটের পর থেকে পর পর মামলায় প্রথমে পুলিশি হেফাজত, পরে জেল হেফাজত হয়েছে তাঁর। পরে ফের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে তাঁকে। এ দিনও বোমাবাজির মামলায় নরেন্দ্রপুর থানা তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে। শাহজাহান আরও জানাচ্ছেন, ভোটের পর থেকে পরিবারের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ নেই। তাঁর বাড়ি জেসিবি মেশিন দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনার পূর্ব জেলা সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, ‘‘শাহজাহানের বিরুদ্ধে কোনও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ নেই। উনি আমাদের সংখ্যালঘু সেলের স্থানীয় নেতা। ভোটের পরে পুলিশ ওঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে। আমরা সিবিআই-কে লিখিত ভাবে জানাতে চলেছি। হাই কোর্টের নির্দেশে ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলায় পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট বলে হাই কোর্টে অভিযোগ করেছে। এই ঘটনা তারই একটি উদাহরণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy