অভিজিৎ দাস ফাইল ছবি।
সাম্প্রতিক কালে তাঁদের নিয়ে তৈরি গান হইচই ফেলে দিয়েছিল সমাজমাধ্যমে। রোজগারের টানে বাইক নিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটারজেরে পদে পদে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকলেও তাঁদের জীবন বাঁধা রেটিং আর গতিতে। সেই গতিরই বলি হলেন বারাসতের বাসিন্দা, খাবার সরবরাহকারী সংস্থার কর্মী, ২৩ বছরের অভিজিৎ দাস। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিরিয়ানির ডাব্বা নিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে মধ্যমগ্রাম উড়ালপুলের উপর দিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ অনির্বাণ বিশ্বাস জানাচ্ছেন, মধ্যমগ্রাম উড়ালপুল দিয়ে বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময়ে উল্টো দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি বাইক অভিজিৎকে ধাক্কা মারে। সেই বাইকে তিন জন যুবক ছিলেন। তাঁরা মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, তা দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।তদন্তকারীরা জানান, বাইকের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন অভিজিৎ। ছিটকে পড়ে বিরিয়ানির ডাব্বা। পিছনথেকে একটি লরি অভিজিৎকে চাপা দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তেইশ বছরের ওই ডেলিভারি বয়ের। পুলিশ জানিয়েছে, যে বাইকটি অভিজিতের বাইকে ধাক্কা মারে, সেটির চালকও হাসপাতালে ভর্তি। ওই বাইকে যে তিন জন ছিলেন, তাঁদের মাথায় হেলমেট ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
মাস দেড়েক আগেই কাজে যোগ দিয়েছিলেন অভিজিৎ।প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বাবা হোটেলের কর্মী এবং মা পরিচারিকার কাজ করেন। সংসারে সচ্ছলতা আনতে খাবার সরবরাহের কাজ নেন অভিজিৎ। এর জন্য ঋণ নিয়ে কেনেন মোটরবাইক। পরিবারের ঘনিষ্ঠেরা জানাচ্ছেন, সেই বাইক কেনাই কাল হল অভিজিতের। বাইকের ঋণ শোধ করার জন্য অভিজিৎ চেষ্টা করতেন রাতের দিকে বেশি অর্ডার নিতে। দুপুরদেড়টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফিরতেন গভীর রাতে।
অনির্বাণদের বাড়িতেই ভাড়া থাকেন অভিজিতের বাবা-মা। অনির্বাণের কথায়, ‘‘বাচ্চা ছেলেটা পরিবারের হাল ধরতে চাকরি নিয়েছিল। বাইকের ঋণ শোধ দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না পরিবারের। তাইরাতের দিকে কাজ করত, যাতে উপার্জন বেশি হয়। মেনে নেওয়া যাচ্ছে না এই মর্মান্তিক মৃত্যু।’’ অভিজিতের মৃত্যুর খবরে স্তম্ভিত তাঁর এলাকা রামকৃষ্ণ পল্লির বাসিন্দারাও। যুবকের প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের বক্তব্য, ‘‘ঝকঝকে ছেলে ছিল অভিজিৎ। ওর মৃত্যুর খবরে সকলে হতবাক। বাবা-মায়ের অবস্থা ভাবতেও আতঙ্ক হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy