যুগল: শহরে শামীর খানের সঙ্গে পাকিস্তানি তরুণী জাওয়ারিয়া খানম। —নিজস্ব চিত্র।
কাঁটাতার পেরিয়ে প্রেমের বহু কাহিনি শুনিয়েছে স্বপ্ননগরী বলিউড। বাস্তবে তা সত্যি করে দেখিয়ে দিল কলকাতা।
হৃদয়ের টান আর কবে সীমান্ত, কাঁটাতার, পাসপোর্ট-ভিসার বেড়াজালে আটকে থেকেছে! তাই কলকাতাবাসী যুবককে বিয়ে করতে সটান পাকিস্তানের করাচি থেকে পার্ক সার্কাসে ছুটে এলেন জাওয়ারিয়া খানম। প্রেমিক শামীর খান, পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা। মাত্র ৪৫ দিনের ভিসা পেয়েছেন ওই পাকিস্তানি তরুণী। আগামী জানুয়ারিতে কলকাতার বুকেই শামীরের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হওয়ার কথা তাঁর।
হেনা, বীর-জারা— ভারত-পাকিস্তানের সীমান্তের বেড়াজালকে উপেক্ষা করে প্রেমকাহিনির অনেক সিনেমা তৈরি হয়েছে বলিউডে। প্রতি সিনেমাতেই দু’টি হৃদয়কে এক হতে হাজার ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয়েছে। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই দেশের আইনকানুন, রেষারেষি, রাজনীতি। তবে শামীর-জাওয়ারিয়ার বাস্তবের প্রেমের গল্প অবশ্য ভিন্ন কথা বলছে।
এ দেশে আসার জন্য জাওয়ারিয়াকে শুরুতে কিছু আইনি জটিলতা পোহাতে হয়েছে ঠিকই। তবে শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার দুপুরে অমৃতসরে আটারি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মাটিতে পা রাখেন ওই তরুণী। তাঁকে দেখে আপ্লুত শামীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে, ফুলের মালা নিয়ে আটারি সীমান্তে বিদেশিনি প্রেমিকার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন পেশায় ব্যবসায়ী শামীর। বিয়ের পরে নতুন কনের ভিসার সময় আরও বাড়ানো যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন শামীর ও জাওয়ারিয়া।
তবে আপাতত সে সব চিন্তা দূরে সরিয়ে আগামী মাসেই নতুন জীবন শুরুর কথা ভাবছেন যুগল। আটারিতে দাঁড়িয়ে জাওয়ারিয়া বলেন, ‘‘এ দেশে থাকার কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। আমি আপ্লুত ভারতে এসে। নতুন জীবন শুরুর অপেক্ষায় রয়েছি।’’ পরিবার সূত্রের খবর, জাওয়ারিয়ার অপেক্ষায় শামীরেরা আটারির কাছেই গুরুদাসপুরে একটি বাড়ি ভাড়া করেছিলেন। ভারতে প্রবেশের পরে মঙ্গলবার দুপুরে অমৃতসর থেকে কলকাতায় উড়ে আসেন ওই যুগল।
কী ভাবে চলছিল শামীর-জাওয়ারিয়ার প্রেমকথা? ফোনে কোনও ভাবে জাওয়ারিয়ার ছবি দেখেছিলেন শামীর। ভাল লাগার সেই শুরু। বরাবরই বিদেশে পড়াশোনা করেছেন শামীর। তিনি জানান, বছর দুয়েক আগে শেষ বার দুবাইয়ে জাওয়ারিয়ার সঙ্গে তাঁর শেষ দেখা হয়েছিল। পাঁচ বছরের সম্পর্ক তাঁদের। তবে মুখোমুখি দু’জনের দেখা হয়েছিল ওই এক বারই। বাকি সময়ে সমাজমাধ্যমে আর ভিডিয়ো কলই ভরসা। কোভিডের কারণে সে সময়ে দু’দেশের সরকার ভিসা দিতে চায়নি। ফলে তাঁদের বিয়ে আটকে যায়। কিন্তু তাঁরা যে বিয়ে করবেনই, সে বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্ত ততদিনে নিয়ে ফেলেছিলেন ওই যুগল।
এ দিন কলকাতায় পা রাখার পরেই বাড়ির হবু বউকে ঘিরে পরিবারে উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। শামীর জানান, দীর্ঘ পথ ভ্রমণের কারণে তাঁরা ক্লান্ত। রাতে জাওয়ারিয়াকে নিয়ে পরিবারের সকলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছেন।
কিন্তু ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ হলে স্ত্রী কোন দেশের পক্ষ নেবেন? হাসিমুখেই বাউন্সার এড়িয়ে গেলেন শামীর। বললেন, ‘‘জাওয়ারিয়া খুব ক্লান্ত। আমার মনে হয়, দু’দেশের মধ্যে বিয়ের জন্য আলাদা ভিসার ব্যবস্থা হলে ভাল। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy