ঐতিহাসিক: ধর্মতলায় ট্রামের প্যারেড। রবিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
শহরের রাজপথে ট্রামের নিয়মিত দেখা পেতে যখন দাবি আর আন্দোলনে নামছেন বিভিন্ন স্তরের মানুষ, তখন রবিবারের সকালে গড়িয়াহাট থেকে বেরোল আটটি ট্রাম। সার্ধশতবর্ষের উৎসবকে যথার্থ রঙিন করল সেই ট্রামযাত্রা। পর পর ট্রামের যাত্রাকে দৃষ্টিবন্দি করার জন্য সাতসকালে গড়িয়াহাট ডিপোয় ভিড় করলেন আট থেকে আশির বিভিন্ন বয়সি মানুষ।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষের মুখে অর্থাৎ, ১৯১৮ সাল থেকে নব্বইয়ের দশকে তৈরি বিভিন্ন ট্রাম এ দিন পথে নেমেছিল। গড়িয়াহাট থেকে এসপ্লানেড এবং পরে এসপ্লানেড থেকে শ্যামবাজার হয়ে ফের এসপ্লানেডে শেষ হয় ওই যাত্রা। সপ্তাহখানেক ধরে পরিশ্রম করে ওই সব ট্রামকে এ দিন পথে নামার উপযোগী করে তোলেন ট্রামকর্মীরা। তাঁরা ছাড়াও ‘কলকাতা ট্রাম ইউজ়ার্স সোসাইটি’র সদস্যেরাও সে কাজে হাত লাগিয়েছিলেন। সবাই মিলে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন এবং পোস্টারে সাজিয়ে তোলেন ট্রামগুলি।
১৯২০ সালে তৈরি ট্রাম ওয়াটার কার ছাড়াও পরে ওই ট্রাম থেকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা ‘বলাকা’ও শামিল হয়েছিল এ দিন। এক সময়ে রবীন্দ্রনাথের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তৈরি হয়েছিল বলাকা। ১৯৪৮ সালে তৈরি ট্রামকে পরে সাজিয়ে ‘চৈতালি’ নাম দেওয়া হয়, ছিল সেটিও। জীবনানন্দ দাশের জন্মের শতবর্ষে ছোট ট্রাম ‘বনলতা’, যা এখন পাটরানি নামে পরিচিত, সেটিও ছিল। আর্ট গ্যালারি এবং দেশভাগের সংগ্রহশালা নিয়েও এ দিনের যাত্রায় শামিল হয়েছিল ট্রাম। এসপ্লানেড থেকে পরে শ্যামবাজার যায় লাইব্রেরি ট্রাম।
এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিল একটি বাংলা ব্যান্ড এবং বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়ারাও। ট্রামযাত্রা দেখতে যেমন ভিড় করেছিলেন পথচারীরা, তেমনই ট্রামে চড়েও সফরে যোগ দিয়েছিলেন অনেকে। ‘রেল এন্থুসিয়াস্ট সোসাইটি’র কলকাতা পর্যায়ের প্রধান এবং রেল বোর্ডের প্রাক্তন কর্তা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিবেশবান্ধব যান হিসাবে ট্রামের প্রাসঙ্গিকতা ফুরিয়ে যায়নি। প্রয়োজন তাকে আধুনিক করা।’’ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সৌমিত্র পালের স্মৃতিচারণে উঠে আসে কলকাতার পরিবহণ ব্যবস্থার ইতিহাস।
কলকাতায় ট্রামের সুবিধার কথা মেলবোর্নের উপমা দিয়ে বোঝাচ্ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রাম কন্ডাকটর এবং পরিবেশকর্মী রোবের্তো ডি অন্দ্রিয়া। তবে ট্রামের ভবিষ্যৎ এ শহরে আদৌ কতটা উজ্জ্বল, সময়ই সেটা বলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy