বিশেষ বাসে চেপে গন্তব্যের পথে যাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।
বাসে ওঠার ঘণ্টাখানেক আগে নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ করছেন যাত্রী। সেই মতো দূরত্ব-বিধি মানার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তাঁর কাছে হোয়াটঅ্যাপের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে স্লট এবং বাসের লাইভ লোকেশন। আর তা দেখেই বাসে উঠছেন যাত্রীরা। ডিজ়েলের অতিরিক্ত দামের কারণে ভাড়াবৃদ্ধি নিয়ে টানাপড়েন এবং পথে বেসরকারি বাসের সংখ্যা কম হওয়ার কারণে যখন প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা, তখন এ ভাবেই বিশেষ পরিষেবা দিচ্ছেন একটি সামাজিক সংগঠনের সদস্যেরা। যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে নিখরচায় শহরের তিনটি রুটে বিশেষ বাস পরিষেবার ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ওই পরিষেবা।
হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ, চিড়িয়ামোড় থেকে হাওড়া ময়দান এবং সেক্টর ফাইভ থেকে গড়িয়া— আপাতত এই তিন রুটে সকাল-সন্ধ্যায় একটি করে ওই বাস চলছে। সংগঠন সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে ৮টায় হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভগামী বাস ছাড়ছে। হাওড়া স্টেশন, বড়বাজার, বি বা দী বাগ, মৌলালি, শিয়ালদহ স্টেশন, সিআইটি, করুণাময়ী ঘুরে সেটি সেক্টর ফাইভে পৌঁছচ্ছে সাড়ে ৯টা নাগাদ। সেই বাসটিই আবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সেক্টর ফাইভ থেকে রওনা হয়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হাওড়া ময়দানে পৌঁছে দিচ্ছে যাত্রীদের। আর এই বাস ধরার জন্য সফরের ঘণ্টাখানেক আগে ৮৪৮২০৮৮৩২৯ নম্বরে ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ করে আগাম জানাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
একই ভাবে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে চিড়িয়ামোড় থেকে বাস ছেড়ে বাগবাজার-শোভাবাজার-মহাত্মা গাঁধী রোড ঘুরে হাওড়া ময়দান পৌঁছচ্ছে। ফিরতি পথে সন্ধ্যা ৬টায় ছেড়ে ৬টা ৪০ মিনিট নাগাদ চিড়িয়ামোড় পৌঁছচ্ছে সেটি। এই বাসটিতে ওঠার জন্য যোগাযোগ করতে হচ্ছে ৮৭৭৭৮২৮২৪২ নম্বরে।
তৃতীয় রুটের বাসটি (যোগাযোগ নম্বর ৭০০৩৩৫২২০৭) সেক্টর ফাইভের কলেজ মোড় থেকে ছাড়ছে সকাল ১০টায়। তার পরে সিটি সেন্টার, পিএনবি, উল্টোডাঙা, মানিকতলা, গিরিশ পার্ক, চাঁদনি চক, পার্ক স্ট্রিট, এক্সাইড, রাসবিহারী মোড়, গড়িয়াহাট, যাদবপুর, গড়িয়া, ক্ষুদিরাম মেট্রো হয়ে পৌঁছচ্ছে গড়িয়া স্টেশনে। ফেরার জন্য বাসটি রওনা হচ্ছে দুপুর ২টো নাগাদ, গন্তব্যে পৌঁছচ্ছে বিকেল ৪টেয়। তবে আগেভাগে স্লট নেওয়া যাত্রীরাই শুধু নন, আসন খালি থাকলে অন্য যাত্রীরাও ওই বাসে ওঠার সুযোগ পাচ্ছেন। সুষ্ঠু ভাবে বাসযাত্রীদের পৌঁছে দিতে বাসে থাকছেন আয়োজক সংগঠনের ভলান্টিয়ারেরা। আর গন্তব্যে পৌঁছে খুশি যাত্রীদের অনেকে আবার চা-ঘুগনি খাওয়াচ্ছেন বাসকর্মী ও ভলান্টিয়ারদের।
তিন রুটে বাস চালানোয় উদ্যোগী সংগঠনের দাবি, অতিমারি পরিস্থিতিতে এর আগে একাধিক কম খরচের ক্যান্টিন চালিয়েছে তারা। এ বার কাজের সূত্রে মানুষ বেরোতে শুরু করায় কয়েকটি ক্যান্টিন বন্ধ রেখে শুরু করেছেন এই বিশেষ পরিষেবা। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধব্রত দাস বলেন, ‘‘সীমিত সামর্থ্য দিয়েই বিকল্প পথ খোঁজার চেষ্টা করেছি, মানুষও সাড়া দিচ্ছেন। পরিষেবা কী ভাবে আরও বাড়ানো যায়, সেই চেষ্টা চলছে। শহরের বাসপ্রেমীদের একটি সংগঠন এই কাজে সাহায্য করছে। সাড়া দিয়েছেন বাসমালিকেরাও।’’
আর বাস চালানোর খরচ? সংগঠন সূত্রের দাবি, নিখরচায় বাস চালানো হলেও যাত্রীরা অনেকেই ভাড়া দিতে চাইছেন বলে রাখা হয়েছে দানপাত্র। তা থেকেই ৪০-৫০ শতাংশ খরচ উঠে আসছে। যাতায়াতের তাগিদ থেকেই মানুষও বাড়িয়ে দিচ্ছেন সাহায্যের হাত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy