পনেরো বছর বয়সের গেরোয় বাতিল হয়ে যাওয়ার পথে হলুদ ট্যাক্সি। তবে পুরনো ট্যাক্সির চালকদের পুনর্বাসন দিতে শহরে একটি বেসরকারি সংস্থা হলুদ রঙের ক্যাব নামাচ্ছে। সি এন জি চালিত ওই সব ক্যাব প্রাথমিক ভাবে সরকারি যাত্রী সাথী অ্যাপের আওতায় পরিষেবা দেবে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর। হলুদ ট্যাক্সির ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখেই ওই সব ক্যাবের রং হলুদ হবে। এ ছাড়াও ক্যাবের গায়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, হাওড়া সেতু, শহিদ মিনারের মতো শহরের একাধিক ঐতিহ্যবাহী স্মারকের মোটিফ থাকবে। ওই সংস্থা দফায় দফায় বছর কয়েকের মধ্যে তিন হাজার এমন ক্যাব নামাতে চায় বলে জানিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে, চলতি মাসের মধ্যে ৫০টি ক্যাব নামানো হবে বলে সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, ওই সংস্থা একটি গাড়ি নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে ব্যবস্থাপনায় এই ক্যাব চালু করবে। সাধারণ ক্যাবের তুলনায় ওই ক্যাবের উচ্চতা কিছুটা বেশি হবে। ভিতরে পরিসরও সামান্য প্রশস্ত। চালকেরা নির্দিষ্ট সংস্থার সঙ্গে শর্তসাপেক্ষে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ওই ক্যাব চালাতে পারবেন। তবে, তাঁদের কোনও ভাবেই আয়ের উপরে কমিশন দিতে হবে না। পরিবর্তে গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ, বিমা এবং অন্যান্য খরচ বাবদ একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ মিটিয়ে যেতে হবে। ক্যাব সংস্থাই গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় দায় বহন করবে।
কলকাতায় সি এন জি জোগানের সমস্যা দূর করতে ইতিমধ্যেই গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্যাব সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা। শুধুমাত্র নতুন হলুদ ক্যাবের জন্য নির্ধারিত এমন সি এন জি পাম্পিং স্টেশন চালুর বিষয়েও আলাপ-আলোচনা চলছে বলে সংস্থা সূত্রের খবর। ওই ক্যাব সংস্থা চালকদের সামাজিক সুরক্ষার বিভিন্ন দিকেও লক্ষ রাখার কথা জানিয়েছে। রাজ্য সরকারের দিক থেকেও এ নিয়ে সহযোগিতা মিলবে বলে ক্যাব সংস্থার দাবি।
পুরনো হলুদ ট্যাক্সির জ্বালানির খরচ বেশি হওয়া ছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণের ঝক্কি অনেক বেশি। সেই জায়গায় সি এন জি অনেকটা সাশ্রয়কারী হওয়া ছাড়াও পরিবেশবান্ধব। ওই সুবিধার কথা মাথায় রেখেই নতুন ক্যাব চালু করা হচ্ছে বলে খবর। এর ফলে ক্যাব চালকরাও আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন বলে সংস্থার দাবি।
পুরনো ট্যাক্সির চালকেরা যাতে যাত্রী সাথী অ্যাপ ব্যবহারে সড়গড় হয়ে উঠতে পারেন, তা দেখতে সরকারি অ্যাপের পক্ষ থেকে চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলেও খবর। চালকেরা চাইলে ওই প্রশিক্ষণের সুবিধা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। নতুন ক্যাব পর্যাপ্ত সংখ্যায় চালু হলে, কলকাতায় হলুদ ট্যাক্সির চালকদের বড় অংশের সুষ্ঠু
পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হতে পারে বলে মনে করছেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)