প্রতীকী ছবি।
এ যেন এক নতুন ধরনের ঝক্কি!
বাবা মারা গিয়েছেন বছর পাঁচেক আগে। অথচ, ছেলে করোনার প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নেওয়ার পরে সেই শংসাপত্র এল মৃত বাবার নামে! শুধু তা-ই নয়, এখন সরকারি পোর্টাল থেকে প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার জন্য মৃত বাবার নামে ছেলের মোবাইলে প্রতিদিন মেসেজ আসতে শুরু করেছে। আর সেই মেসেজ পাঠানো বন্ধ করাতে ছেলেকে এখন ছুটে বেড়াতে হচ্ছে পুরসভা, প্রশাসন ও স্বাস্থ্যকর্তাদের ঘরে।
প্রতিষেধক নিয়ে অভূতপূর্ব এমনই অভিযোগ উঠেছে হাওড়ায়। এর আগে হাওড়াতেই আন্দুল রোডের কাছে আলমপুরের এক বাসিন্দা প্রতিষেধক নেওয়ার আগেই শংসাপত্র পেয়ে গিয়েছিলেন। সেই ঘটনায় চরম নাজেহাল হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এ বার মৃত বাবার নামে প্রতিষেধক নেওয়ার শংসাপত্র ও এসএমএস আসায় ভোগান্তিতে পড়েছেন মধ্য হাওড়ার রাজবল্লভ সাহা লেনের বাসিন্দা নিখিল নন্দী। জেলা স্বাস্থ্য দফতরেও বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
নিখিলবাবু বললেন, ‘‘গত মে মাসে আমি ও আমার স্ত্রী হাওড়া পুরসভার ছ’নম্বর বরোর রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় নিই। সেখানে আধার কার্ড দিয়েছিলাম। কিন্তু শংসাপত্রে দেখি বাবার নাম। অথচ, বাবা ২০১৬ সালে মারা গিয়েছেন।’’
নিখিলবাবু জানালেন, এর পরেই শুরু হয় হয়রানির পর্ব। ওই শংসাপত্র নিয়ে তাঁকে যেতে বলা হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। সেখানে গেলে তাঁকে পাঠানো হয় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসে। ওই দফতরের তরফে আবার দরখাস্ত লিখে আনতে বলা হয় তাঁকে। সেই দরখাস্তে নিখিলবাবুকে লিখতে হয়, শংসাপত্রে প্রথম ডোজ় নিয়েছেন বলে তাঁর বাবা কালীপদ নন্দীর নাম লেখা হয়েছে। ওটা হবে নিখিল নন্দী। কারণ, কালীপদবাবু পাঁচ বছর আগেই মারা গিয়েছেন।
নিখিলবাবু জানান, তাঁর দরখাস্ত পাওয়ার পরে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়, প্রথম ডোজ়ের শংসাপত্রে নাম পরিবর্তন করা যাবে না। তবে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার সময়ে সব ঠিক করে নেওয়া হবে। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘এর পরে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার জন্য আমি পুরসভায় যোগাযোগ করি। কিন্তু পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া বন্ধ রয়েছে। তাই পুরসভার তরফেই হাওড়া ময়দান এলাকার রেড ক্রস সোসাইটিতে আমার দ্বিতীয় ডোজ়ের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে গিয়ে আমি নিজের নামেই শংসাপত্র পাই।’’
কিন্তু গোল বাধে মৃত বাবার নামে প্রথম ডোজ় হয়ে যাওয়ায়। সেই ডোজ় নেওয়ার পরে নির্ধারিত সময় পেরোতেই দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার জন্য মেসেজ আসতে শুরু করে। যা এখনও অব্যাহত। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিতে গিয়ে যে এতটা হয়রান হতে হবে, তা কল্পনাও করিনি। কী ভাবে, কাদের ভুলে এটা হল, তা-ও আমাকে পরিষ্কার করে কেউ জানাননি।’’
হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা প্রথম। কোউইন পোর্টালে আধার কার্ড থেকে নাম তোলার সময়ে ওই ব্যক্তির বাবার নাম ভুল করে কম্পিউটারে এন্ট্রি করার ফলেই এই সমস্যা হয়েছে। কী ভাবে সেটা ঠিক করা যায়, আমরা দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy