ললিতা সর্দার ফাইল ছবি।
বাড়ির সদর দরজা তালাবন্ধ। চাবি লাগানো তালার সঙ্গেই। দরজার সামনে সিঁড়িতে একটি বাটিতে কিছুটা মুড়ি-বাতাসা রাখা। আর বাটির নীচে একটি কাগজ চাপা দেওয়া। দৃশ্যটি দেখে সন্দেহ হয়েছিল পড়শিদের। কিন্তু বহু ডেকেও তাঁরা গৃহকর্ত্রীর সাড়া পাননি। শেষে ঘরের পিছন দিকের জানলা দিয়ে প্রতিবেশীরা দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে ওই বাড়ির বাসিন্দা ললিতা সর্দারের (৩৬) দেহ। গায়ে একটি কম্বল চাপা দেওয়া। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে ললিতার দেহ উদ্ধার করে। রবিবার আনন্দপুর থানা এলাকার কালিকাপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় মৃতার স্বামী হরিপদ সর্দারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় হরিপদ স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে। তাঁরা আরও দাবি করেছেন, ওই কাগজে হরিপদ লিখেছে, সে-ও আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে। শেষে তার মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থান দেখে মগরাহাট থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিকাপুরের একটি বস্তিতে একটি এক কামরার ঘরে ভাড়া থাকতেন ললিতা এবং হরিপদ। পড়শিরা জানিয়েছেন, ওই দম্পতির দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। তাঁরা তাঁদের দেশের বাড়ি কুলতলিতে থাকেন। ললিতা বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। তবে হরিপদ বিশেষ কিছু করত না। মূলত সে হরিনাম সঙ্কীর্তন করত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, সম্প্রতি দেশের বাড়িতে গিয়েছিলেন ললিতা ও হরিপদ। শনিবার রাতে তাঁরা কালিকাপুরে ফেরেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রাতে কোনও অস্বাভাবিকতা টের পাননি তাঁরা। এ দিন সকালে দেখেন, ললিতাদের বাড়ির বাইরের দরজায় তালা দেওয়া এবং তালার সঙ্গে চাবি লাগানো। দরজার সামনে সিঁড়িতে একটা বাটিতে রয়েছে কিছুটা বাতাসা এবং মুড়ি। বাটির নীচে একটি কাগজ চাপা দেওয়া। অনেক বেলা পর্যন্ত বাড়ি এ ভাবে বন্ধ দেখে পড়শিদের সন্দেহ হয়। এর পরেই তাঁরা ঘরের পিছন দিকের জানলা দিয়ে ললিতার দেহ দেখেন।
পুলিশ জানিয়েছে, হরিপদ জেরায় দাবি করেছে, ললিতা তাকে আধ্যাত্মিক কাজে বাধা দিচ্ছিলেন। সেই রাগেই সে তাঁকে খুন করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy