প্রতীকী ছবি।
সপ্তাহ তিনেক ধরে বছর পনেরোর মেয়েটির খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। শেষে কয়েক দিন আগে ফোন করে সেই নাবালিকা জানায়, কাশ্মীরে পাচার করে দেওয়া হয়েছে তাকে! অতিমারি আবহে সরকারি বিধিনিষেধের মধ্যেই কাশ্মীরে পাচার হয়ে যাওয়া ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে বারুইপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ওই কিশোরীকে একটি হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৮ জুলাই বারুইপুরের সূর্যপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে কাশ্মীরে পাচার করা হয়েছে। তিনি পুলিশকে জানান, সপ্তাহ তিনেক ধরে তাঁর মেয়ে নিখোঁজ। তবে কয়েক দিন আগে সে কাশ্মীর থেকে বাড়িতে ফোন করে নিজের খবর দেয়।
ওই নাবালিকার পরিজনদের অভিযোগ, জাহাঙ্গির লস্কর নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে গত ২৫ জুন বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল মেয়েটি। তার পর থেকে তার সম্পর্কে জাহাঙ্গিরকে একাধিক বার প্রশ্ন করা হলেও সে ঠিকঠাক জবাব দিত না বলে অভিযোগ।
তদন্তে নেমে প্রথমেই জাহাঙ্গিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। তার বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি থাকায় এর পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখনই ওই নাবালিকাকে পাচারে রফিক শেখ ও দুলাল শেখ নামে দু’জনের নাম উঠে আসে। তাদের গ্রেফতার করা হলে পুলিশি জেরায় ধৃতেরা নাবালিকাকে পাচারের কথা স্বীকার করে। জানা যায়, হাওড়া স্টেশনে ওই নাবালিকাকে হাতবদল করেছিল জাহাঙ্গিরের দল।
এর পরে কাশ্মীরের যে নম্বর থেকে ওই নাবালিকার ফোন এসেছিল, সেই সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বারুইপুর থানার সাব-ইনস্পেক্টর তরুণ দাসের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয়। কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিন কয়েক আগে কাশ্মীর পৌঁছয় ওই দলটি। এর পরে কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে গত রবিবার রাতে বারামুলা থেকে উদ্ধার করা হয় ওই নাবালিকাকে। কাশ্মীর পুলিশ সূত্রের খবর, সেখানে ৬০ বছরের এক বৃদ্ধের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
করা হয়েছিল।
বারুইপুর পুলিশ জেলার এক কর্তা জানান, করোনা সংক্রমণ রুখতে কড়া বিধিনিষেধের মধ্যেই রাজ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে নারী পাচারকারীরা। পুলিশ-প্রশাসন করোনা-বিধিনিষেধ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নজরদারির অভাব রয়েছে, আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে পাচার-চক্র। এমনকি ভিন্ রাজ্যের পাচারকারীরাও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। জাহাঙ্গিরকে জেরা করে চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে পাচারের মতো ঘটনা রুখতে অভিভাবকদের আরও সতর্ক থাকার কথা বলছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘কড়া বিধিনিষেধের সময়ে শত ব্যস্ততার মধ্যেও পুলিশি নজরদারি থাকার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে নাবালিকা বা সাবালিকাদের অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy