—প্রতীকী ছবি
কোভিড পরিস্থিতির একেবারে শুরুর দিকে খারাপ হয়ে গিয়েছিল হাওড়ার বাঁশতলা শ্মশানঘাটের বৈদ্যুতিক চুল্লি। গত ১০ মাসেও তা সারানো যায়নি। এ দিকে, শিবপুরকে কোভিড শ্মশান হিসেবে চিহ্নিত করায় বাঁশতলার পুরনো কাঠের চুল্লিতেই মৃতদের দাহ করছেন আত্মীয়-পরিজনেরা। অভিযোগ উঠেছে, সেই সুযোগে আমপানে পড়ে যাওয়া গাছ কেটে এনে সেই কাঠই মোটা টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে তাঁদের কাছে।
হাওড়া শহর ও বালি বিধানসভা এলাকার সব ক’টি শ্মশান ধরলে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের জন্য বৈদ্যুতিক চুল্লি রয়েছে মোট পাঁচটি। এর মধ্যে শিবপুর শ্মশানঘাটে রয়েছে দু’টি। বাঁশতলা, উত্তর হাওড়ার বাঁধাঘাট এবং বালিতে রয়েছে একটি করে। শিবপুর শ্মশানের একটি চুল্লি বর্তমানে কোভিডে মৃতদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। অন্য চুল্লিটি সাধারণের জন্য খোলা থাকলেও সেখানে আতঙ্কে যেতে চাইছেন না কেউ। অন্য দিকে, বাঁশতলা ঘাটের বৈদ্যুতিক চুল্লিটি এখন খারাপ। তাই মধ্য হাওড়া-সহ গ্রামীণ হাওড়ার বিস্তৃত এলাকা এবং দক্ষিণ হাওড়ার মানুষদের ভরসা করতে হচ্ছে বাঁশতলা ঘাটের কাঠের চু্ল্লির উপরে। অভিযোগ, সেই সুযোগেই ওই শ্মশানে গজিয়ে উঠেছে চোরাই কাঠের এক দুষ্টচক্র। আমপানে পড়ে যাওয়া অসংখ্য গাছ কেটে সেখানে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই মোটা মোটা কাঠের গুঁড়ি ও ডাল কেটে রাখা হচ্ছে আগে থেকেই। সেই কাঠ চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে দাহ করতে আসা লোকজনকে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকার কাঠ কিনে দাহকাজ করতে হচ্ছে। অথচ, ওই শ্মশানেই বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ করার খরচ মাত্র ৪০০ টাকা।
আমপানের তাণ্ডবে হাওড়া শহরে কয়েক হাজার গাছ পড়ে গিয়েছিল। পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রাতারাতি সেই গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করে ফেলে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা লক্ষ লক্ষ টাকা দামের সেই সব গাছ বেমালুম উধাও হয়ে গিয়েছে। জেলা প্রশাসন বা পুরসভাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলেও উত্তর মেলেনি। সেই গাছের হিসেব দিতে পারেননি কেউই।
পুরসভার এক কর্তা বললেন, ‘‘দু’বছর ধরে পুরসভায় কোনও নির্বাচিত বোর্ড নেই। যার ফলে কাটা গাছের হিসেব কেউ রাখেনি। পরে জানা গিয়েছে, ওই সমস্ত গাছের একটি অংশ বিভিন্ন শ্মশানের ঠিকাদারেরা তুলে নিয়ে গিয়ে শবদেহের কাজে লাগিয়েছেন।’’ ওই কর্তা জানান, বাঁশতলা ঘাটের বৈদ্যুতিক চুল্লি সারানো হলেই কাঠের ব্যবহার কমে যাবে। তাই ওই চুল্লিটি সারানোর জন্য জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে।
কিন্তু ২০১৪ সালে উদ্বোধন হওয়া বাঁশতলা শ্মশানের চুল্লি বার বার খারাপ হয় কী করে? পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘কেএমডিএ বাঁশতলার ওই চুল্লি তৈরি করেছিল। কিন্তু চুল্লিতে যে প্রযুক্তি ও জিনিসপত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তা বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ফের নতুন করে ২৫ লক্ষ টাকার দরপত্র ডেকে পুরনো প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ বদলানো হবে। আশা করা যায়, খুব দ্রুত হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy