প্রতীকী ছবি।
দুপুরে দিদিমা খাওয়ার কথা বলায় বছর দশেকের মেয়ের উত্তর ছিল— ‘‘মা বাড়ি ফিরলে একসঙ্গে খাব।’’ এর পরেই ছোট্ট সাইকেল নিয়ে সে বেরিয়ে পড়েছিল পাড়ার অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে। হঠাৎ চেঁচামেচি কানে আসায় রাস্তায় বেরিয়ে দিদিমা দেখেন, সিমেন্টের বস্তা ভর্তি লরির নীচে পড়ে তাঁর নাতনি। দ্রুত এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয় তাকে। বৃহস্পতিবার ময়না-তদন্তের পরে বিকেলেই বালিকার দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে।
বুধবার বিকেলে দশ বছরের সেই বালিকা সঞ্জনা দাসের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পরে এলাকায় ঢুকতেই বোঝা গেল, শোকে মূহ্যমান প্রতিবেশীরা সকলেই। তবে শোক ছাপিয়ে উঠছে বেপরোয়া গতির গাড়ি নিয়ে তাঁদের ক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, এর জেরেই প্রাণ গিয়েছে সঞ্জনার। তারাতলা থানার গোড়াগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনেই ঝুপড়িতে বাবা, মা, দাদা, দিদিমার সঙ্গে থাকত সঞ্জনা। বাবা ঠিকা শ্রমিক। মা কারখানার কর্মী। দিদিমার কাছেই ১১ বছরের করণের সঙ্গে থাকত ১০ বছরের সঞ্জনা। বছর দেড়েক আগে ছাদ থেকে পড়ে দু’টি পা-ই ভাঙে করণের। সঞ্জনা স্থানীয় স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
বুধবার সঞ্জনার বাবা সুনীল দাস কাজে গেলেও মা আরতি দাস ছেলেকে নিয়ে এসএসকেএমে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন। এ দিন কাঁদতে কাঁদতে আরতি বলেন, ‘‘আমি বাড়ি থাকলে মেয়ে আমাকে ছাড়া খেত না। কালকেও বলেছিল, আমি ফিরলে একসঙ্গে খাবে।’’ দুর্ঘটনার পর থেকে হাঁড়ি চড়েনি। ছোট্ট মেয়ের শোকে প্রায় অভুক্ত পাড়াও। এখনও ওই রাস্তার আগের মোড় থেকেই গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ দিন কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক দল দুর্ঘটনাস্থলের পাশাপাশি দুর্ঘটনা ঘটানো লরিটি থেকেও নমুনা সংগ্রহ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল যাদব বলেন, ‘‘প্রতি বছর এখানে দুর্ঘটনা ঘটে। মাঝেমধ্যে ঝুপড়ির ভিতরেও গাড়ি ঢুকে যায়। বার বার পুলিশকে স্পিড ব্রেকার বসানোর কথা বললেও কেন জানি না, তা হয় না। প্রতিবাদে রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় নেই।’’ এ বার প্রশাসনের তরফে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তাতে অবশ্য ভরসা নেই বাসিন্দাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy