Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Child Death

শ্রমিকদের ‘অসতর্কতা’য় শিশু-মৃত্যু, ডোবা ঘিরল পুলিশ

২৪ নম্বর রেলগেট এলাকার বাসিন্দারা জানান, এক মাস ধরে পাইপ বসানোর কাজ চলছে। যার জেরে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সেগুলি চার দিক দিয়ে খোলা।

An image of the road

দক্ষিণদাঁড়ির ২৪ নম্বর রেলগেটের কাছে এখনও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এমন বহু গর্ত। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৩ ০৫:৫৯
Share: Save:

শুধুমাত্র অসতর্কতার জেরে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। জলের লাইনের কাজ করতে আসা কেএমডিএ-র শ্রমিকেরা নিজেদের থাকার জায়গার বাইরে বিরাট গর্ত খুঁড়েছিলেন নোংরা জল ফেলার জন্য। সেই গর্তে পড়েই গত রবিবার মৃত্যু হয় দক্ষিণদাঁড়ির নতুন পাড়ার বাসিন্দা, চার বছরের এক শিশুর। নির্মাণস্থলে বহু জায়গাতেই নিজেদের প্রয়োজনে এমন গর্ত বা কুয়ো খুঁড়ে রাখেন শ্রমিকেরা। তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্মাণ সংস্থার মাথাব্যথা থাকে না। কিন্তু এমন অসতর্ক কাজকর্মের কারণে কত বড় বিপদ হতে পারে, দক্ষিণদাঁড়ির ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। প্রশ্ন উঠেছে, কোথাও কোনও রকম নজরদারি থাকবে না কেন?

গত বুধবার ওই এলাকার ২৪ নম্বর রেলগেটের কাছে এমনই একটি সরকারি প্রকল্পের কাজে আসা শ্রমিকদের থাকার ঘরের পিছনের ডোবা থেকে ইসতাবরেজ আনসারি নামে চার বছরের এক শিশুর দেহ উদ্ধার হয়। গত রবিবার সে ওই ডোবায় পড়ে গিয়েছিল। এই ঘটনায় বুধবার এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তার পরে বৃহস্পতিবার থেকে ওই এলাকায় পাইপ বসানোর কারণে রাস্তায় যে সব গর্ত তৈরি হয়েছে, সেগুলি লোহার রেলিং আর টিন দিয়ে ঘিরে দিতে শুরু করে পুলিশ। কেএমডিএ-র এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কার গাফিলতিতে, কী ভাবে এটা ঘটল, সবটা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এ দিন ওই নির্মাণস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ডোবার নোংরা জল ভরে রয়েছে আবর্জনায়। সেটি আবার টিন আর দড়ি দিয়ে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, শিশুটি দৌড়তে দৌড়তে শ্রমিকদের ঘরের সামনে দিয়ে ডোবার দিকে গিয়ে আড়াল হয়ে যাচ্ছে। কী ভাবে সে ডোবার জলে পড়ে গেল, তা অবশ্য বুঝে উঠতে পারছেন না তদন্তকারীরা। শ্রমিকদের ওই দরমার ঘরে ঢুকে দেখা গেল, সেখানে কেউ নেই। তাঁদের জিনিসপত্র পড়ে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবারই ওই শ্রমিকেরা কাজে ছুটি নিয়ে চলে গিয়েছেন। তাই শিশুটি ডোবায় পড়ে গেলেও কেউ তা দেখতে পাননি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, কেএমডিএ-র সঙ্গে আজ, শুক্রবার কথা বলার চেষ্টা হবে।

২৪ নম্বর রেলগেট এলাকার বাসিন্দারা জানান, এক মাস ধরে পাইপ বসানোর কাজ চলছে। যার জেরে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সেগুলি চার দিক দিয়ে খোলা। দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে এক দোকানির অভিযোগ, ‘‘আমরা শ্রমিকদের বার বার বলেছি, গর্তগুলির চার দিক ঘিরে কাজ করতে। বড় মানুষেরও গর্তে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু আমাদের কথায় কেউ কান দেননি।’’

ওই দুর্ঘটনার পরে এ দিন ইদের খুশিও ফিকে হয়ে গিয়েছে নতুন পাড়ায়। ইসতাবরেজের বাবা মহম্মদ ইসতিয়াক আনসারি ও মা রুমি খাতুন বিধ্বস্ত অবস্থায় বসেছিলেন বাড়ির বাইরে। তাঁদের সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। রুমি বললেন, ‘‘ছেলে ডিম খেতে চেয়েছিল। আমি ডিম আনতে বেরিয়েছিলাম। সেই ফাঁকে কখন বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে, বুঝতে পারিনি।’’ দুর্ঘটনাস্থল থেকে নতুন পাড়ার দূরত্ব খুব বেশি নয়। পুলিশ জানায়, বাড়ি থেকে বেরিয়ে রেলের দু’টি লেভেল ক্রসিং পার হয়ে শিশুটি সেই ডোবার ধারে পৌঁছে গিয়েছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Death road construction Child death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy