ফারুখ চৌধুরি মইনুদ্দিন। নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশ থেকে ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথ বিস্মৃত হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ফারুখ চৌধুরী মইনুদ্দিন নামের ওই ব্যক্তিকে প্রায় উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় কলকাতা বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার করে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করল এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ।
টিকিট কেটেও মইনুদ্দিন দেশে ফেরার উড়ানে উঠতে পারেননি। গত সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরের বাইরে বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখে এয়ারপোর্ট থানার এক কর্মী। সঙ্গে ব্যাগ ছিল না মইনুদ্দিনের। এমনকি এক পায়ে জুতোও ছিল না। তিনি কোথায় যাবেন, কোথা থেকে ফিরছেন, জানতে চাওয়া হলে পুলিশকে কোনও জবাব দিতে পারেননি। উল্টে প্রশ্নের জবাবে শুধুই হেসেছেন। কিন্তু মুখ থেকে কথা সরেনি। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ-কর্মীরা ওই ব্যক্তিকে প্রথমে দেখেন। কিন্তু এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ মইনুদ্দিনকে শুধু উদ্ধারই করেনি, নিজেদের উদ্যোগে তাঁর ফেরার বিমানের টিকিট কেটে দিয়েছে। এমনকি তাঁকে এক জোড়া নতুন জুতোও কিনে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানো সম্ভব হত না, যদি না তাঁর পাসপোর্ট পাওয়া যেত। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির পোশাক তল্লাশিতে তাঁর কাছ থেকে পাসপোর্ট এবং একটি ফোন পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরে তাঁর বাড়ির ঠিকানা এবং স্ত্রী-র নম্বর খুঁজে বার করে পুলিশ। জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে কলকাতার মুকুন্দপুরে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন মইনুদ্দিন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লায়।
মইনুদ্দিনের স্ত্রী পুলিশকে জানিয়েছেন, ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও মইনুদ্দিন মানসিক বিকারগ্রস্ত নন। গত ২০ জানুয়ারি বাংলাদেশ থেকে যখন তিনি রওনা হয়েছিলেন তখন স্বাভাবিক আচারআচরণেই ছিলেন। কথা ছিল ২৩ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটের বিমানে ফিরবেন। কিন্তু মইনুদ্দিন সেই বিমানে উঠতে পারেননি। অন্য দিকে, সময়ে না ফেরায় তাঁর আত্মীয়-বন্ধুরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
পুলিশ জানিয়েছে, মইনুদ্দিন কাছ থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও নথিপত্র পাওয়া যায়নি। তাই কোন হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা করিয়েছেন তা-ও জানা যায়নি। তবে মইনুদ্দিনকে বিমানে তুলে দেওয়ার আগে, রীতি মেনে করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভও এসেছে। যদিও মইনুদ্দিন কেন বিমানে উঠতে পারেননি, তা স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। তারা জানিয়েছে, বিমানবন্দর দেখতে এসে অনেককেই পথ হারাতে দেখেছেন তাঁরা। পুলিশ তাঁদের গন্তব্য পৌঁছতে সাহায্যও করে। তবে এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা করাতে আসা কোনও ক্যানসারের রোগীকে ‘হারিয়ে’ যেতে দেখলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy