Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪

৪ প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া খুন, আতঙ্ক শহরে

নেতাজিনগরের দিলীপ (৭১) ও স্বপ্না মুখোপাধ্যায় (৬৫) নিঃসন্তান।নরেন্দ্রপুর নিহত প্রদীপ বিশ্বাস (৫৫) ও আলপনা বিশ্বাস (৪৫)।

নেতাজিনগরে নিহত দিলীপ ও স্বপ্না মুখোপাধ্যায় (বাঁ দিকে)। নরেন্দ্রপুরে খুন হওয়া দম্পতি প্রদীপ ও আলপনা বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র

নেতাজিনগরে নিহত দিলীপ ও স্বপ্না মুখোপাধ্যায় (বাঁ দিকে)। নরেন্দ্রপুরে খুন হওয়া দম্পতি প্রদীপ ও আলপনা বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০৪:১৬
Share: Save:

কলকাতার দক্ষিণে নেতাজিনগর ও নরেন্দ্রপুরে মঙ্গলবার প্রায় একই সময়ে দুই প্রৌঢ় দম্পতির মৃতদেহ পাওয়া গেল। দুই দম্পতিই নিজেদের বাড়িতে কার্যত নিঃসঙ্গ অবস্থায় খুন হয়েছেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।

নেতাজিনগরের দিলীপ (৭১) ও স্বপ্না মুখোপাধ্যায় (৬৫) নিঃসন্তান। বাড়ির পাশে ফাঁকা জমি। বিক্ষিপ্ত ভাবে আছেন কয়েক জন ভাড়াটে। নরেন্দ্রপুর পঞ্চায়েত এলাকায় বাগানবাড়ির বাসিন্দা প্রদীপ বিশ্বাস (৫৫) ও আলপনা বিশ্বাসের (৪৫) কাছাকাছি পড়শিদের ঘেঁষাঘেঁষি নেই। হঠাৎ হামলায় আর্ত চিৎকারও সহজে কারও কানে পৌঁছনোর কথা নয়। কলকাতার সাত কিলোমিটারের মধ্যে এই চার প্রৌঢ় নারী-পুরুষের হত্যাকাণ্ডে শহর ও আশপাশের ছোট পরিবারে বয়স্কদের সুরক্ষার অভাবের বিষয়টি ফের বেআব্রু হয়ে গেল। এই স্মার্টফোনের যুগেও বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো বেঁচে থাকা পরিবারগুলির বিপন্নতার ছবি হতবাক করে দিয়েছে নগরবাসীকে। নিহতদের পরিচিতদের অনেকেই এখন আফসোস করছেন।

নরেন্দ্রপুরের বিশ্বাস দম্পতির ক্ষেত্রে খুনটা কবে, কী ভাবে ঘটেছিল, তা স্পষ্ট নয়। দেহ পচেগলে গিয়েছিল। এ দিন সকালে বাড়ির কাছে গিয়ে দুর্গন্ধ পান পড়শিরা। পুলিশ ডেকে তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে বীভৎস দৃশ্য! খুনের পরে দু’টি দেহ একটি ট্রলিব্যাগে ভরে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। সম্ভবত ব্যাগটি বেশি ভারী হওয়ায় আততায়ীরা তা বার করতে পারেনি। নইলে বাড়ি থেকে বেমালুম উবেই যেতেন ওই দম্পতি।

নেতাজিনগরের মুখোপাধ্যায় দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়েছে ‘খুন’ হওয়ার পরের সকালেই। কলের মিস্ত্রি বেল বাজিয়ে সাড়া না-পেয়ে ধাক্কা দিতেই হাট করে খুলে যায় দরজা। সিঁড়ির উপরেই পড়ে থাকতে দেখা যায় প্রৌঢ়ার দেহ। এই খুনের পিছনে চেনা লোকেরই হাত দেখছে পুলিশ। তাদের সন্দেহ, সোমবার রাতে দম্পতি সম্ভবত সেই সবে খেয়ে উঠেছেন। চেনা কেউ আসায় বৃদ্ধা দরজা খুলতে নামেন। বৃদ্ধের পায়ে সমস্যা ছিল। তিনি উপরে ছিলেন। আততায়ী গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধাকে শ্বাস রোধ করে মেরে উপরে ওঠে বলে পুলিশের ধারণা। বৃদ্ধকে সম্ভবত বালিশ চাপা দিয়ে মারা হয়। বাড়িতে আলমারি অনেক। বৃদ্ধ দম্পতি বারবার ব্যাঙ্কে যেতে পারতেন না বলে হাতে নগদ রাখতেন। সেই টাকা লুটের মতলবে তাঁদের খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতায় তিন লক্ষ, পশ্চিমবঙ্গে ৭৫ লক্ষ প্রবীণের বাস। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, কোথায় কোন প্রবীণ একলা থাকেন, থানা তা চিহ্নিত করতে পারলে আর একটু সতর্ক থাকা যায়। কলকাতা পুলিশের এলাকায় বয়স্ক নাগরিকদের সঙ্গে পুলিশের কিছুটা যোগ থাকলেও উপকণ্ঠে তার ঘাটতি আছে, মেনে নিচ্ছেন ওই কর্তা।

অন্য বিষয়গুলি:

Netaji Nagar Narendrapur Murder Elderly Couple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy