Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
School Uniform

পোশাকের রং বদলে নারাজ, চিঠি শহরের ৩১টি স্কুলের

দফতর জানিয়েছে, সরকারি, সরকার পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির প্রাক্‌ প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পোশাকের রং হতে হবে নীল-সাদা।

স্কুলের পোশাকের রং বদল করে স্কুলের সেই ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ করতে নারাজ কলকাতার বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুলের পোশাকের রং বদল করে স্কুলের সেই ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ করতে নারাজ কলকাতার বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৩৭
Share: Save:

কোথাও পোশাকের সঙ্গে মিশে রয়েছে স্কুলের ইতিহাস, তার ঐতিহ্য। কোথাও এর সঙ্গে জড়িয়ে কৃতী পড়ুয়াদের স্মৃতি, কৃতী মানুষদের ছোঁয়া। তাই স্কুলের পোশাকের রং বদল করে স্কুলের সেই ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ করতে নারাজ কলকাতার বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই কারণে পোশাকের চিরাচরিত রং বদলে সরকার নির্ধারিত নীল-সাদা রং করতে না চেয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরকে চিঠি দিয়ে আর্জি জানিয়েছে কলকাতার ৩১টি স্কুল।

প্রাক্‌ প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের পোশাক দেওয়া হয় শিক্ষা দফতরের তরফে। দফতর জানিয়েছে, সরকারি, সরকার পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির প্রাক্‌ প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পোশাকের রং হতে হবে নীল-সাদা। সেইমতো বহু স্কুলে ওই পোশাক পাঠাতেও শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু এই ঘোষণার পরে বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, এতে তাঁরা অনিচ্ছুক। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “কলকাতার মোট ৩১টি স্কুল তাদের পোশাকের রং পাল্টাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে।”

অনিচ্ছুক স্কুলগুলির তালিকায় রয়েছে কলকাতার অন্যতম নামী স্কুল পাঠভবন। তারা জানিয়েছে, তাদের পোশাকের লোগোয় রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের ছোঁয়া। তাই এই পোশাকের পরিবর্তন করতে নারাজ পাঠভবন কর্তৃপক্ষ।স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শুভ্রা গুপ্ত বলেন, “আমাদের স্কুলের পোশাকের লোগো তৈরি করে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ। পোশাকের রং পরিবর্তন হলে তাঁর তৈরি লোগোটির বদলে বিশ্ববাংলা লোগো লাগাতে হবে। সেটা আমরা চাই না। তাই পোশাকের রং বদলাতে না চেয়ে শিক্ষা দফতরে আবেদন করেছি।”

মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে জানান, ১৯০৫ সালে স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্কুলটি। সাদা জামা-প্যান্ট, বুকপকেটে মনোগ্রাম করে বাংলায় লেখা ‘মিত্র’, সঙ্গে কালো জুতো— পড়ুয়াদের এই পোশাক সেই প্রথম দিন থেকে একই রয়েছে।

রাজা বলেন, “এই পোশাক পরেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়, শহিদ যতীন দাস, স্বাধীন ভারতের প্রথম এয়ার মার্শাল সুব্রত মুখোপাধ্যায়, গায়ক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মতো কৃতীরা স্কুলে এসেছেন। এমনকি রাজ কপূর শৈশবে যে কয়েক বছর কলকাতায় ছিলেন, তখনও আমাদের স্কুলেই পড়েছেন। তিনিও এই পোশাকেই স্কুলে এসেছেন। তাই এই পোশাক স্কুলের ঐতিহ্য। এটা বদলাতে চাই না। আমরাও শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন করেছি।”

স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস সান্যালের মতে, শহরের বেশিরভাগ সংখ্যালঘুস্কুলই বহু পুরনো, তাই তাদের পোশাকেরও ঐতিহ্য আছে। বিভাস বলেন, “কলকাতার বিশপ পরিতোষ ক্যানিং শিক্ষা দফতরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, সংখ্যালঘু স্কুলগুলির বেশির ভাগই ঐতিহ্যশালী, পোশাকও এত বছর ধরে একই রয়েছে। সেই পোশাকের রঙে পরিবর্তন চাইছেন না। চার্চ অব নর্থ ইন্ডিয়ার অধীনে থাকা ১৫টি স্কুলও একই আবেদন করেছে।”

তবে কি এই স্কুলগুলির আবেদন গ্রাহ্য হবে? শিক্ষা দফতরের এক কর্তার অবশ্য দাবি, এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

school uniform State Government Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy