ফাইল চিত্র।
কাল, বৃহস্পতিবার ২১ জুলাই। দু’বছর পরে ধর্মতলায় শহিদ দিবস পালন করতে চলেছে তৃণমূল। সেই উপলক্ষে দু’দিন আগে থেকেই জেলার কর্মী-সমর্থকেরা দলে দলে ঢুকতে শুরু করেছেন শহরে। কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরে যেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দৈনিক সাতশোর বেশি ছিল, সেখানে শনি, রবি এবং সোমবারের পরিসংখ্যান বলছে, সংক্রমিত হয়েছেন যথাক্রমে ৪৪৮, ২৫৩ এবং ৩৯৮ জন! যা দেখেশুনে চিকিৎসক মহলের একাংশ ঠাট্টার ছলে বলছেন, রাজনৈতিক সমাবেশের দিকে খেয়াল রেখে কোভিড কি তা হলে রাতারাতি কমে গেল? তাঁদেরই বড় অংশের আশঙ্কা, গত দু’-তিন দিনের পরিসংখ্যান যা-ই বলুক, বাস্তবে এই ভিড়ের জেরে সংক্রমণ বৃদ্ধি হতে পারে।
এ দিকে শহিদ দিবসের আয়োজনে দেখা গেল সরকারি স্তরে কোভিড-বিধি মানার যাবতীয় অনীহা। দু’দিন আগেই দূর-দূরান্তের জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ মূলত হাজির হচ্ছেন সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক এবং কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে। মঙ্গলবার দুপুরে দুই জায়গায় গিয়ে দেখা গেল, কোভিড-বিধি না মেনেই ভিড় জমিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। জটলা করে চলছে গল্প-খাওয়াদাওয়া।
ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘‘করোনার দাপট কমেছে। শনি এবং রবিবার শহরে সংক্রমিত হয়েছেন যথাক্রমে ৪৪৮ ও ২৫৩ জন। মাঝখানে রোজ শহরে সংক্রমিত সাতশোর উপরে ছিল। এখন চারশোর নীচে।’’ প্রায় একই দাবি মেয়রফিরহাদ হাকিমের। তিনি বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে আতঙ্কের কারণ নেই। কেউ আক্রান্ত হলে এখন দু’-তিন দিনে সুস্থ হয়ে উঠছেন।’’ কলকাতা পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘২১ জুলাইকে স্বাগত জানাতে করোনাকে কমানো হয়েছে। করোনায় মৃত্যু বাড়ছে, আর ২১ জুলাই নিয়ে তৃণমূল নাচানাচি করছে! এর মাসুল মানুষকে দিতে হবে।’’
সেন্ট্রাল পার্কের বইমেলা প্রাঙ্গণে ৩০ হাজার এবং গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে ২০ হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সেন্ট্রাল পার্কে সাত হাজার এবং গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে প্রায় তিন হাজার কর্মী-সমর্থক এসেছেন বলে খবর। অথচ দুই শিবিরেই কারও মুখে মাস্ক নেই।
সেন্ট্রাল পার্কের মেডিক্যাল শিবিরে রাখা আছে স্যানিটাইজ়ার। মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের আলাদা কাউন্টারও রয়েছে। সে সব বিতরণের লোকও আছেন। অথচ শয়ে শয়ে মানুষ মাস্ক ছাড়া ঢুকছেন। স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করছেন না কেউ। দেহের তাপমাত্রা মাপার ‘থার্মাল গান’ কিংবা র্যাপিড টেস্টেরও ব্যবস্থা নেই। এ দিকে সেন্ট্রাল পার্কের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে সন্তুষ্ট পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘নিজেদের সুরক্ষায় সকলকে মাস্ক পরতেই হবে। কোভিড-বিধি মানতে হবে।’’
বক্ষরোগ চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ‘‘কোভিডের চতুর্থ ঢেউ চলছে। এর মধ্যে এত মানুষ আসছেন! ফেরসংক্রমণ বাড়বেই।’’ বক্ষরোগ চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগীর পর্যবেক্ষণ, ‘‘এই রকম সময়ে প্রশাসনের তরফে এমন জমায়েত কোনও ভাবেই কাম্য নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy