—ফাইল চিত্র।
ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের নতুন ‘স্ট্রেন’ দেখা দেওয়ার পরে গত রবিবার সকালে লন্ডন থেকে কলকাতায় কোভিডের উপসর্গ নিয়ে এসেছেন দুই যুবক। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাঁদের কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রাজ্যকে বলা হয়েছে, ওই দুই যুবকের দেহ থেকে সংগৃহীত নমুনা যেন রেখে দেওয়া হয়। যাতে পরবর্তীকালে তা করোনা সংক্রান্ত গবেষণার কাজে লাগতে পারে।
ওই দুই যাত্রীর কাছাকাছি সিটে বসে সে দিন যাঁরা লন্ডন থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে কলকাতায় এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। তাঁদের ১৪ দিন গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে। কলকাতায় নামার পরে ওই দুই যুবক বিমানবন্দরের পুরনো টার্মিনালের লাউঞ্জে বসে আরও ২৪ জন যাত্রীর সঙ্গে ঘণ্টা ছয়েক সময় কাটিয়েছেন এবং একই শৌচালয় ব্যবহার করেছেন। সেই যাত্রীদেরও সতর্ক করা হয়েছে বলে দাবি।
করোনার নতুন এই ‘স্ট্রেন’ আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যে কারণে সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার ভারত থেকে লন্ডন যাতায়াতের যাবতীয় উড়ান আপাতত বাতিল করে দিয়েছে। এখন প্রতি শনিবার মাঝরাতে লন্ডন থেকে একটিমাত্র সরাসরি উড়ান কলকাতায় এসে রবিবার ভোরে আবার উড়ে যেত। আপাতত সেটিও বন্ধ থাকছে। তবে কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞা থাকছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
লন্ডন থেকে কলকাতার সরাসরি উড়ান বন্ধ হয়েছে ঠিকই, তবে লন্ডনের যাত্রীরা অন্য কোনও উড়ান ধরে অন্য শহর ঘুরে এখানে আসতেই পারেন। সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “একমাত্র এমিরেটসের উড়ানেই এই মুহূর্তে লন্ডন থেকে যাত্রীদের আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এমিরেটসের সঙ্গে কথা বলেছি। ওরাও তো শুনেছি লন্ডন থেকে দুবাইয়ের সমস্ত উড়ান বাতিল করে দিয়েছে।”
বিদেশ থেকে সরাসরি কলকাতায় এসে নামার পরে এখানে কোভিড পরীক্ষা করানোর সুবিধা একমাত্র লন্ডন উড়ানের যাত্রীরাই পেতেন। প্রতিটি উড়ানেই কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া বেশ কিছু যাত্রী আসছিলেন। কৌশিকবাবুর কথায়, “গত ২২ অক্টোবর এই ব্যবস্থা চালু হয়। উড়ান নামার পরে ভোরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এসে যাত্রীদের নমুনা নিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই যাত্রীদের পুরনো ডোমেস্টিক টার্মিনালে অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। এখন লন্ডন উড়ান বন্ধ হলে তার আর প্রয়োজন হবে না। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোনও উড়ান সংস্থা যদি আমাদের জানায় যে, তাদের উড়ানে এমন কোনও যাত্রী এসেছেন, যিনি সম্প্রতি ব্রিটেনে গিয়েছিলেন বা সেখানে ছিলেন, তা হলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে বা যাত্রীদের আলাদা সরিয়ে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের ডেকে এনে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।”
তবে, কোভিড রিপোর্ট ছাড়া শুধুমাত্র লন্ডনের যাত্রীদের কলকাতায় আসার অনুমতি দেওয়া নিয়ে সামগ্রিক ভাবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ২২ অক্টোবর থেকে গত রবিবার পর্যন্ত লন্ডনের সরাসরি উড়ানে কলকাতায় এসেছেন ১৫৮৮ জন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ৩৩২ জন এসেছেন কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছাড়া। ওই ৩৩২ জনের পরীক্ষা হয়েছে কলকাতায় এবং ছ’জনের কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। যাঁদের মধ্যে গত রবিবারের দুই যুবকও রয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, বিমানে ওই ছ’জনের আশপাশে বসা যাত্রীরা তো সংক্রমিত হতে পারতেন। বিমানসেবিকাদেরও যথেষ্ট ঝুঁকি ছিল। কলকাতায় নামার পরে নমুনা দিয়ে যে লাউঞ্জে ওই ছ’জন বাকি ৩২৬ জন যাত্রীর সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন এবং একই শৌচালয় ব্যবহার করেছেন, তাঁরাও সংক্রমিত হতে পারতেন।
উড়ান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, লন্ডন থেকে আসা কোনও যাত্রীর দেহে সংক্রমণের ইঙ্গিত মিললে বা নমুনা পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ এলে রাজ্যের চাহিদা মতো সেই যাত্রীর আশপাশে বসা বাকি প্রত্যেক যাত্রী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy