Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

১৩টি কন্টেনমেন্ট জ়োন একই ওয়ার্ডে, নজরে পাটুলি

প্রশাসনের সাম্প্রতিক হিসেব অনুযায়ী, শহরের মোট কন্টেনমেন্ট জ়োনের এক তৃতীয়াংশই রয়েছে দক্ষিণ শহরতলির ওই অংশে।

পাটুলি এলাকায় মাইকে প্রচার চালাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

পাটুলি এলাকায় মাইকে প্রচার চালাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০৬:১০
Share: Save:

জুলাই থেকে হঠাৎই ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। অবস্থা এমনই যে, গত শনিবার পর্যন্ত ওই একটি ওয়ার্ডেই মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৮৪, মৃতের সংখ্যা আট। তাই শহরের মোট ৩৯টি কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে পাটুলি থানা এলাকার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডেই ১৩টি কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের বাঘা যতীন, পাটুলি, ফুলবাগানে সব চেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়ানোয় উদ্বিগ্ন পুলিশ ও প্রশাসন।

প্রশাসনের সাম্প্রতিক হিসেব অনুযায়ী, শহরের মোট কন্টেনমেন্ট জ়োনের এক তৃতীয়াংশই রয়েছে দক্ষিণ শহরতলির ওই অংশে। পুরসভা এবং পুলিশ সূত্রের খবর, ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে বাঘা যতীন, বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি, ফুলবাগান, বাঘা যতীন স্টেশন রোড, গাঙ্গুলিবাগানের মতো এলাকা। তথ্য বলছে, লকডাউন শুরুর প্রথম তিন মাসে সেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৯। কিন্তু জুলাই থেকে হঠাৎই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে, যা চিন্তা বাড়িয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের।

কেন এই অবস্থা? ওই ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘পুলিশ, পুর স্বাস্থ্য দফতর-সহ সকলের সঙ্গে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ নিয়ে আলোচনায় করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে যে, ওয়ার্ডের চারটি জায়গা— ফুলবাগান, পাটুলির একটি ব্লক, বীরনগর-তালপুকুর এবং বাঘা যতীন জে ব্লকে সংক্রমণ বেশি হারে ছড়িয়েছে। ফলে সেখানেই ১৩টি কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে। সেখানে বাসিন্দাদের অপ্রয়োজনে বাইরে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। কিছু প্রয়োজন হলে আমরা পাশে দাঁড়াচ্ছি।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, থানাগুলি নিজের এলাকায় সংক্রমণের বিষয়ে খোঁজ নেবে এবং কোনও জায়গায় কন্টেনমেন্ট জ়োন করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করলে তা প্রশাসনকে জানাবে। সেই মতো পুরসভার সঙ্গে কথা বলেই পাটুলির ওই এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োন করার সুপারিশ করা হয়। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘ওই সব এলাকায় সংক্রমণ কেন বেশি, তার খোঁজ করা হলে দেখা যায় যে, বাঘা যতীন স্টেশন রোডের উপরে বসা বাজার থেকে ছড়াচ্ছে করোনা। এর পরেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মূলত ওই বাজারের আশপাশের এলাকাগুলিকে কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে।’’

ওই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, কোনও করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসার পরেও সেই এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জ়োনের আওতাভুক্ত করে রাখা হচ্ছে। এ নিয়ে পুলিশের দাবি, করোনা-রোগী সুস্থ হওয়ার পরেই মেলামেশা শুরু করে দিলে ফের এলাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে। তাই কোনও রোগী সুস্থ হয়ে ফেরার পরে আরও ১৪ দিন ওই এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জ়োনেই রাখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় সুস্থ হওয়ার পরে ১৪ দিনের মধ্যে দু’জন রোগী ফের আক্রান্ত হয়েছেন। তাই সংক্রমণ আটকাতেই এই সিদ্ধান্ত। ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর বাপ্পাদিত্যের কথায়, ‘‘প্রথম দিকে মানুষ অনেক বেশি সচেতন ছিলেন। কিন্তু আনলক-পর্বের মানুষ করোনা নিয়ে অনেক বেশি উদাসীন। সে জন্যই এই এলাকায় সংক্রমণ মাত্রাছাড়া হয়ে গিয়েছে।’’ তবে পুরসভা সূত্রের খবর, পাটুলি থানা এলাকায় ১৩টি কন্টেনমেন্ট জ়োন করার ফলে সেখানে গত কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে সবসময়ে ডিউটি করছেন পুলিশকর্মীরা। অকারণে বাইরে না বেরোনোর জন্য মাইকে প্রচারও চালানো হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata Containment Zone Patuli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy