—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পঞ্চায়েত ভোট সামলাতে কলকাতা পুলিশের একটি বড় অংশকে জেলায় পাঠানো হচ্ছে। ফলে আগামী ক’দিন শহরের নিরাপত্তার বাঁধন আলগা হবে কি না, সেই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে। ভোটের কাজে বাহিনীর প্রায় অর্ধেক কর্মী জেলায় চলে যাওয়ায় দিন চারেক শহরের রাস্তা কার্যত পুলিশশূন্য থাকার আশঙ্কা রয়েছে। লালবাজারের তরফে পরিস্থিতি সামলানোর ‘বন্দোবস্ত’ করার আশ্বাস দেওয়া হলেও নজরদারির ফাঁক থেকে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে শহরের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণেও এর প্রভাব পড়বে কি না, সেই প্রশ্নও থাকছে।
নির্বাচন কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত ভোটে ১২ হাজার পুলিশকর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। বুধবার থেকেই ওই কর্মীরা বিভিন্ন জেলায় যেতে শুরু করেছেন। লালবাজার সূত্রের খবর, ভোটে কলকাতা পুলিশের ১০ হাজার কনস্টেবলের পাশাপাশি এসআই ও সার্জেন্ট মিলিয়ে ৫০০ জন এবং ১৫০০ জন এএসআই-কে পাঠানো হচ্ছে। ভোট মিটিয়ে তাঁদের ফিরতে চার দিনেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে। ফলে ওই ক’দিন শহরের নিরাপত্তায় বড় ফাঁক থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগ থেকেও পুলিশকর্মী তুলে নেওয়ায় সেখানকার কাজ কী ভাবে চলবে, সেই প্রশ্ন ঘুরছে বাহিনীর অন্দরেই। কোনও কোনও থানা থেকে অর্ধেকেরও বেশি কর্মীকে ভোটের জন্য তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে খবর।
বর্তমানে কলকাতা পুলিশ বাহিনীতে মোট কর্মী-সংখ্যা ২৪ হাজারের কাছাকাছি। গত কয়েক বছর ধরে নিয়োগ না হওয়ায় এমনিতেই কর্মী-সঙ্কট রয়েছে বাহিনীতে। সেই সঙ্গে বড় অংশের পদোন্নতি হওয়ায় নিচুতলার কর্মীর সংখ্যা এখন অপ্রতুল। এমন পরিস্থিতিতে অর্ধেকেরও বেশি কর্মীকে ভোটের কাজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
এর পাশাপাশি আছে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত চিন্তাও। লালবাজার জানাচ্ছে, কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ২৫টি গার্ড থেকে ভোটের কাজে যাচ্ছেন প্রায় ৮০ জন সার্জেন্ট, ১৮০০ জন ট্র্যাফিক কনস্টেবল, ২০০ জন এএসআই এবং দু’হাজার হোমগার্ড। এই বিপুল সংখ্যক কর্মীর একটি বড় অংশ প্রতিদিন শহরে যান নিয়ন্ত্রণ করেন। এই অবস্থায় শহরে যান নিয়ন্ত্রণের রাশ কয়েক হাজার সিভিক ভলান্টিয়ারের হাতে থাকবে বলে অভিযোগ। যদিও ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, অফিসারদের বড় একটি অংশের পাশাপাশি গার্ডের ওসি এবং এসি-দের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশের আধিকারিকদের মতে, আজ, বৃহস্পতিবার এবং কাল, শুক্রবার ট্র্যাফিক পুলিশের কার্যত অগ্নিপরীক্ষা। তবে ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশের দাবি, বর্তমানে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালের মাধ্যমে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই বাহিনীর বড় একটি অংশ না থাকলেও যান চলাচলে তেমন প্রভাব পড়বে না।
সহকারী নগরপাল পদমর্যাদার এক আধিকারিক বললেন, ‘‘হাতে কর্মী না থাকলে তো কিছু করার নেই। যাঁরা ভোটের কাজে যাচ্ছেন না, তাঁদেরই বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর পাশাপাশি থানার কাজ পরিচালনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ তার পরেও পরিস্থিতি সামলানো যাবে তো? এর নির্দিষ্ট উত্তর দিতে চাননি তিনি। তবে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাহিনীতে রিজ়ার্ভ ফোর্স থাকে। তাঁদের বড় অংশকেই ভোটে পাঠানো হচ্ছে। তুলনায় অল্প সংখ্যক কর্মীকে থানা ও গার্ড থেকে নেওয়া হচ্ছে। শহরের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে দিকে নজর রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy