Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Fire accident

ছ’জনকে ছাদ পার করিয়ে নীচে পড়ে গেল বালক

আগুন থেকে বাঁচতে সবার মতো ১২ বছরের বালকটিও বাড়ির বাকিদের নিয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে ছাদে উঠে গিয়েছিল।

মর্মান্তিক: আগুন থেকে বাঁচতে এই ফাঁক (চিহ্নিত) পেরোতে গিয়েই পড়ে যায় ইউনেস। নিজস্ব চিত্র

মর্মান্তিক: আগুন থেকে বাঁচতে এই ফাঁক (চিহ্নিত) পেরোতে গিয়েই পড়ে যায় ইউনেস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ০২:০১
Share: Save:

তার কলা বিভাগের পরীক্ষা ছিল শনিবার। কিন্তু সেই পরীক্ষা আর তার দেওয়া হল না। শুক্রবার রাতে গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের আগুন ধরে যাওয়া বাড়ির বাসিন্দা বালকের মৃত্যু হল অন্য এক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে।

আগুন থেকে বাঁচতে সবার মতো ১২ বছরের বালকটিও বাড়ির বাকিদের নিয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে ছাদে উঠে গিয়েছিল। অপেক্ষা করছিল কখন দমকলকর্মীরা তাদের উদ্ধার করবেন। এক সময়ে দমকলকর্মীরা এসে পাশের বাড়ির লোকজনের সাহায্যে দুই বাড়ির পাঁচিলের মাঝে মই আর কাঠের পাটাতন লাগিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করলেন। বালকটি একে একে মা, দাদি, ভাই এবং ওই বাড়িরই আরও তিনটি বাচ্চাকে কাঠের পাটাতন দিয়ে পার করিয়ে পাশের ছাদে যেতে সাহায্য করল। কিন্তু নিজের বেলাতেই শেষরক্ষা হল না তার। অন্ধকার আর ধোঁয়ায় কিছু দেখতে না পেয়ে পাটাতনের বদলে শূন্যে পা ফেলে আটতলা থেকে নীচে ছিটকে পড়ল বালক ইউনেস রহমান। রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।

শুক্রবার রাতে মধ্য কলকাতার ২১ গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের মুন ভবনে আগুন লাগে। ওই বহুতলের আটতলায় বাবা, মা, দাদি আর

ভাইয়ের সঙ্গে থাকত ইউনেস। বৌবাজারের সেন্ট জোসেফ স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ওই রাতে আগুন লাগার পরে ইউনেস বাড়ির বড় ছেলের ভূমিকা পালন করে। লম্বা, ভাল চেহারার ছেলে ছ’জনকে উদ্ধার করেও মুহূর্তের ভুলে নিজে বাঁচাতে পারল না।

মহাত্মা গাঁধী রোডের পুলিশ মর্গের বাইরে শনিবার দুপুরে বসেছিলেন ইউনেসের বাবা সফিউর। কোনও ভাবে দু’-এক কথা বলার ফাঁকেই জানালেন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ। ওই বহুতলের আটতলায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন তিনি। শুক্রবার রাতে আগুন লাগার পরে ওই বাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে আর এক ছেলে-সহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সফিউর রয়েছেন তাঁদের কলুটোলার বাড়িতে। বাড়ির বাসিন্দারা জানান, অন্ধকারে মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে সবাইকে পার করিয়েছিল ইউনেস।

সফিউর জানান, আটতলা থেকে রাস্তায় পড়ে ছটফট করছিল ইউনেস। তাকে উদ্ধার করে মিন্টো পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সফিউরের অভিযোগ, ‘‘এক ঘণ্টা ধরে সেখানে অপেক্ষা করতে হয় ছেলেকে ভর্তি করাতে। চিকিৎসায় দেরি হওয়ায় ছেলে সেখানে মারা যায়। আমরা অভিযোগ জানাব এ নিয়ে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Fire accident death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy