Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Post Poll Violence

Bengal Election Violence: রাজ্যকে ভর্ৎসনা, হাই কোর্টে খারিজ ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি

আদালতের বক্তব্য, গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি রাজ্য সরকার। তাদের উপর ভরসা করা যাচ্ছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ১২:১৩
Share: Save:

ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় হাই কোর্টে ধাক্কা রাজ্যের। রাজ্যের তরফে দায়ের করা রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বরং ১৮ তারিখের নির্দেশই বহাল থাকবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানোয় নতুন করে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। জানিয়ে দেন, রাজ্য বলছে রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের কাছে হিংসার কোনও অভিযোগই জাম পড়েনি, অথচ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে ৫৪১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তাই রাজ্য সরকারের উপর একেবারেই ‘আস্থা’ নেই তাঁদের। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তদন্ত করলে, রাজ্যের আপত্তি কীসের, তা-ও জানতে চায় আদালত।

সোমবার পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি শুরু হলে রাজ্যের তরফে আদালতে একটি তালিকা পেশ করা হয়। তাতে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, কত জন এখনও উপদ্রুত এলাকায় ফিরতে পারেননি, তার সবিস্তার হিসেব তুলে ধরা হয়।

কিন্তু সেই তালিকা হাতে পেয়ে বিচারপতি বিন্দল বলেন, ‘‘এ সব কিছু দেখতে চাই না। যেভাবে তদন্ত হয়েছে, তা সঠিক নয়। পুলিশ এফআইআর-ই দায়ের করেনি। এত গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। এত লুকোচুরি কেন? এর মানে আপনারা অভিযোগকারীদের বক্তব্যই শুনছেন না। রাজ্যের আশ্বাসে আদালত ভরসা রাখতে পারছে না। শেষ যে নির্দেশ ছিল, সেটাই বহাল থাকবে৷’’ তবে রাজ্য চাইলে হলফনামা দিতে পারে বলেও জানান বিচারপতি বিন্দল।

২ মে ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির অভিযোগ তুলতে শুরু করে বিজেপি। তা নিয়ে সরব হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। বলা হয়, ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে জায়গায় জায়গায় বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। ভাঙচুর করা হচ্ছে তাঁদের ঘর-বাড়ি। প্রাণ বাঁচাতে বহু মানুষ পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এ নিয়ে মে মাসে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেই সময় ঘরছাড়াদের ফেরাতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত। ওই কমিটিতে জাতীয় ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশন, রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সদস্যরা শামিল ছিলেন। সরাসরি যাতে ওই কমিটির কাছে অভিযোগ পৌঁছয়, তার জন্য একটি ইমেল আইডি-ও চালু করা হয়। তাতে সব মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার ২৪৩টি অভিযোগ জমা পড়ে। বিষয়টি সামনে আসার পরই আদালতে তিরস্কৃত হয় রাজ্য। বিচারপতি বিন্দলের বক্তব্য ছিল, ‘‘আমাদের পর্যবেক্ষণে ভোট-পরবর্তী হিংসার প্রমাণ রয়েছে। অথচ গোড়া থেকে হিংসার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল রাজ্য। লিগ্যাল সার্ভিস রিপোর্টও রাজ্যের যুক্তির সঙ্গে মেলেনি।’’

এর পর ১৮ জুন অর্থাৎ গত শুক্রবার আদালত নির্দেশ দেয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি দল বা কমিটি গঠন করবে। তারা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে হিংসার রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করবে। কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে কী উঠে এল ৩০ জুনের মধ্যে তা আদালতে জমা দিতে হবে। তাদের সাহায্য করবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ও পুলিশ। কোনও অসহযোগিতার অভিযোগ উঠলে তার দায় নিতে হবে রাজ্যকেই। এই নির্দেশ মানা না হলে আদালত অবমাননার দায়েও পড়তে হতে পারে বলেও রাজ্যকে সতর্ক করেন বিচারপতিরা।

হাই কোর্টের এই নির্দেশের পরই রাজ্য এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে বিভিন্ন মহলে। তার প্রেক্ষিতে রবিবার আদালতে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য। সেই মতো সোমবার সকাল ১১টায় ফের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি বিন্দল, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন, বিচারপতি সৌমেন সেন, বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়। সেখানেই ফের তিরস্কৃত হয় রাজ্য। আগামী ৩০ জুন ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার পরবর্তী শুনানি।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Kolkata High Court Post Poll Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy