Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

লগ্নি-কর্তাদের ধরতে গড়িমসি, তোপ কোর্টের

বিভিন্ন মামলায় দায়সারা তদন্ত এবং নিষ্ক্রিয়তার জন্য বারবার উচ্চ আদালতের তোপের মুখে পড়েও পুলিশের মধ্যে কোনও হেলদোল দেখা যাচ্ছে না। অভিযুক্তদের ধরতে না-পেরে হাত গুটিয়ে বসে থাকার জন্য এ বার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ক্ষোভের মুখে পড়ল তারা। বিচারপতি চেল্লুর মঙ্গলবার মন্তব্য করেন, কোনও অভিযুক্তের খোঁজে গিয়ে তাঁকে না-পেয়ে ফিরে আসাতেই পুলিশি তদন্ত শেষ হয়ে যায় না। একটি বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা চলছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৭
Share: Save:

বিভিন্ন মামলায় দায়সারা তদন্ত এবং নিষ্ক্রিয়তার জন্য বারবার উচ্চ আদালতের তোপের মুখে পড়েও পুলিশের মধ্যে কোনও হেলদোল দেখা যাচ্ছে না। অভিযুক্তদের ধরতে না-পেরে হাত গুটিয়ে বসে থাকার জন্য এ বার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ক্ষোভের মুখে পড়ল তারা।

বিচারপতি চেল্লুর মঙ্গলবার মন্তব্য করেন, কোনও অভিযুক্তের খোঁজে গিয়ে তাঁকে না-পেয়ে ফিরে আসাতেই পুলিশি তদন্ত শেষ হয়ে যায় না। একটি বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা চলছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলাতেই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।

ওই অর্থ লগ্নি সংস্থার আট জন অংশীদারের মধ্যে এক মহিলা-সহ দু’জনকে গত বছর গ্রেফতার করে সোনারপুর থানার পুলিশ। কিন্তু মামলাকারীর আইনজীবী জ্যোতির্ময় সোম এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন, পুলিশ অন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না। সরকারি আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত আদালতে জানান, পুলিশ বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে অর্থ লগ্নি সংস্থার কার্যালয় এবং অন্য কিছু জায়গায় গিয়েছিল। সব জায়গাতেই তালা লাগানো ছিল। তাই পুলিশ ফিরে আসতে বাধ্য হয়।

তখনই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, অভিযুক্তদের পাওয়া যায়নি বলে ফিরে এলেই পুলিশের তদন্ত শেষ হয়ে যায় না। তিনি সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ওই অভিযুক্তদের খোঁজ পেতে পুলিশ আর কী করেছে? সরকারি আইনজীবী জানান, অভিযুক্তদের হদিস পেতে বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের ছবি পাঠিয়ে প্রচার চালিয়েছে পুলিশ।

সরকারি আইনজীবীর জবাবে সন্তুষ্ট হননি প্রধান বিচারপতি। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, অভিযুক্তদের হদিস পেতে পুলিশ আর কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করে তা জানাতে হবে।

আবেদনকারীর আইনজীবী এ দিন জানান, ২০০৯ সাল থেকে ওই লগ্নি সংস্থা বাজার থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা তুলেছে। কিন্তু তারা আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিচ্ছে না। পুলিশ সুরজিৎ নায়েক ও সর্বাণী সরদার নামে দুই অংশীদারকে গ্রেফতার করেছিল। গ্রেফতারির ৬৩ দিনের মাথায় আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন সুরজিৎ। অন্য জন অন্তর্বর্তিকালীন জামিনে মুক্ত আছেন।

আদালতে চারটি আবেদন জানিয়ে গত বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা দায়ের হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, ওই অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। বাজার থেকে তোলা টাকায় কারা লাভবান হয়েছেন, তা জানানো হোক। অর্থ লগ্নি সংস্থার অভিযুক্ত অংশীদারেরা যাতে দেশের বাইরে পালাতে না-পারেন, তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিক আদালত। সেই সঙ্গে ওই সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হোক রাজ্য সরকারকেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE