Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
KMC Election 2021

Kolkata Municipal Election 2021: দল কড়া ব্যবস্থার ইঙ্গিত দিলেও মনোনয়ন প্রত্যাহারে রাজি নন তৃণমূলের তিন নির্দল

বুধবার শেষ হয়েছে কলকাতা পুরভোটের মনোনয়ন পর্ব। মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন সচ্চিদানন্দ। বুধবার মনোনয়ন দাখিল করেছেন রতন ও তনিমা।

নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, তনিমা চট্টোপাধ্যায় এবং ও রতন মালাকার।

নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, তনিমা চট্টোপাধ্যায় এবং ও রতন মালাকার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২১ ১১:৪৭
Share: Save:

দল কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও মনোনয়ন প্রত্যাহারে রাজি নন কলকাতার পুরভোটে তৃণমূলের তিন নির্দল প্রার্থী। এই ভোটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা ভবানীপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭২ এবং ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে যথাক্রমে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রতন মালাকার। পাশাপাশিই, প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ভগ্নি নির্দল প্রার্থী হয়েছেন বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে।

বুধবার শেষ হয়েছে কলকাতা পুরভোটের মনোনয়ন পর্ব। মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন সচ্চিদানন্দ। বুধবার মনোনয়ন দাখিল করেছেন রতন ও তনিমা চট্টোপাধ্যায়। যার প্রেক্ষিতে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস কুমার বলেছেন, ‘‘৪ তারিখ (শুক্রবার) মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে নির্দল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাববে।’’

জেলা সভাপতি কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেও তিন প্রার্থী কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারে রাজি নন। ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সচ্চিদানন্দ একসময় মুখ্যমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’-দের মধ্যেই ছিলেন। ২০১০ সালে পুরভোটে ৭০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হওয়ার পর তাঁকে কলকাতা পুরসভার চেয়ারম্যানও করা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের পুরভোটে সচ্চিদানন্দ বিজেপি-র অসীম বসুর কাছে পরাজিত হন। তার কিছুদিন পরেই বিজেপি কাউন্সিলর অসীম যোগ দেন তৃণমূলে। বিষয়টি ভালভাবে নেননি সচ্চিদানন্দ। তার পর দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের অন্দরে কিছুটা ‘নিষ্প্রভ’ হয়ে পড়েন তিনি। ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে তাঁকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। সে কারণে দলের ওপর ক্ষুব্ধ হন ‘মনুয়া-দা’ (এই নামেই সচ্চিদানন্দকে চেনেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা)। উপনির্বাচনের সময় মমতা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে তাঁর কাছে পাঠিয়েছিলেন ক্ষোভের কারণ জানতে।

সেই সচ্চিদানন্দ এ বার নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে পড়েছেন রাজ্য সভাপতি সুব্রতের ভাই সন্দীপরঞ্জন বক্সীর বিরুদ্ধে। যা নিয়ে ভবানীপুর তৃণমূলের অন্দরমহলে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। নির্দল প্রার্থী হওয়া নিয়ে সচিদানন্দ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, ‘‘প্রার্থী হওয়ার আগে আমি দেবাশিস কুমার, ফিরহাদ হাকিম, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস এবং রাজ্য সভাপতির অফিসকে জানিয়ে দিয়েছিলাম। বুধবার মদন মিত্র এসেছিলেন আমার সঙ্গে কথা বলতে। আমি তাঁকেও আমার অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি।’’

সচ্চিদানন্দ আরও বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের সদস্য নই। তাই আমাকে সাসপেন্ড বা বহিষ্কারের কোনও প্রশ্নই আসছে না। প্রার্থী হয়েছি এলাকার তৃণমূল কর্মীদের দাবি মেনে। প্রার্থী প্রত্যাহার করা মানে কর্মীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা। আমি সেটা করতে পারব না।"

মুখ্যমন্ত্রীর ওয়ার্ডে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন বিদায়ী কাউন্সিলর রতন। ২০ বছর তৃণমূলের কাউন্সিলর তিনি। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মুখ্যমন্ত্রীর ভাইয়ের স্ত্রী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের কড়া অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিতের কথা জেনেও তিনি বলেছেন, ‘‘প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করা নিয়ে কোনও কথা এখনও ভাবিনি।’’

আর বালিগঞ্জের ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সুব্রতের বোন তনিমা বলেছেন, ‘‘আমি দলের বিরুদ্ধে নই। দল আমায় প্রার্থী করতে পারেনি। কিন্তু প্রয়াত দাদার ইচ্ছাকে সম্মান দিয়ে এবং কর্মীদের অনুরোধেই আমাকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে হয়েছে। দল আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেওও আমার কিছু করার নেই। প্রার্থিপদ প্রত্যাহারের কোনও প্রশ্ন ওঠে না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE