Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

গুরু-শিষ্যের লড়াই

একে অপরকে শুভেচ্ছা জানালেও রাজনীতির লড়াই চলছে। গুরুর আশীর্বাদ নিয়ে ভোটযুদ্ধে জয়ী হবেন, আশা শিষ্যের।

(বাঁ দিক থেকে) প্রদীপ সরকার, তৃণমূল প্রার্থী ও চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী।

(বাঁ দিক থেকে) প্রদীপ সরকার, তৃণমূল প্রার্থী ও চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী।

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪১
Share: Save:

স্কুলজীবনে তিনি ছিলেন শিক্ষাগুরু। তাঁর কাছে বাংলা-সংস্কৃতের পাঠ নেওয়ার কথা আজও মনে পড়ে শিষ্যের। স্মৃতি আবছা হলেও শিষ্যের কথা ভুলে যাননি গুরুও। মাঝে ৩০ বছরের ব্যবধান। এ বার সম্মুখ সমরে গুরু চিত্তরঞ্জন মণ্ডল ও শিষ্য প্রদীপ সরকার। আগামী কয়েকদিন খড়্গপুরে বিধানসভা উপ-নির্বাচনে এই গুরু-শিষ্যের লড়াই দেখবে রেলশহর!

উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। আর কংগ্রেস-সিপিএম জোটপ্রার্থী প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। অবশ্য চিত্তরঞ্জনের আরেক পরিচয় তিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। ১৯৭২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত শহরের অতুলমণি পলিটেকনিক হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। মূলত বাংলা ও সংস্কৃত পড়াতেন। অতুলমণি হাইস্কুল থেকেই ১৯৮৯ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন তৃণমূলের প্রার্থী। স্কুলজীবনে বাংলার শিক্ষক হিসাবে চিত্তরঞ্জনের কথা স্পষ্ট স্মরণে রয়েছে তাঁর। মাস্টারমশাইও ভুলে যাননি ছাত্রকে। এখন পুরপ্রধান প্রদীপের সঙ্গে কার্যক্ষেত্রে যোগাযোগও রয়েছে কাউন্সিলর চিত্তরঞ্জনের। রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও স্নেহ-শ্রদ্ধার সম্পর্ক অটুট রয়েছে গুরু-শিষ্যের। শহরের বাসিন্দা কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস ঘোষ বলেন, “গুরু সবসময়ে শিষ্যের থেকে এগিয়ে থাকে। তার উপরে গুরু হিসাবে চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের মতো স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষের এখন অভাব রয়েছে। ভাবমূর্তির জোরেই গুরু জয়ী হবেন।” খড়্গপুরের বাসিন্দা তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ বলছেন, “গুরুর বয়স হয়েছে। শিষ্য তরতাজা যুবক। মানুষ কাজের মানুষ হিসাবে যুবক প্রার্থী প্রদীপ সরকারকে বেছে নেবেন।”

একে অপরকে শুভেচ্ছা জানালেও রাজনীতির লড়াই চলছে। গুরুর আশীর্বাদ নিয়ে ভোটযুদ্ধে জয়ী হবেন, আশা শিষ্যের। আর গুরুর দাবি, তৃণমূলেরও একাংশ তাঁকেই বিধায়ক চাইছেন।

শিষ্য সম্পর্কে গুরুর মূল্যায়ন, ‘‘ছাত্র হিসাবে প্রদীপ সরকারকে মনে রয়েছে। পড়াশোনোর দিকটি উল্লেখযোগ্য না হলেও ওঁর (প্রদীপ) মধ্যে স্পোর্টসম্যান স্পিরিট ছিল। এখন পুরপ্রধানের পদের সম্মান জানিয়ে আমি ওঁকে অফিসে স্যর বলে ডাকি। ওঁ লজ্জা পেয়ে আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে স্যর-স্যর বলে। শিক্ষক হিসাবে ওঁকে শুভেচ্ছা জানাই। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার লড়াইয়ে আমি জিতব।” আর প্রদীপের মন্তব্য, “চিত্তবাবু আমার শিক্ষাগুরু। তাই ওঁকে শ্রদ্ধা করি। উনি প্রার্থী হওয়ায় ছাত্র হিসাবে শুভেচ্ছা জানাব। কয়েকদিন আগেই প্রণাম করেছিলাম। এ বার রাজনীতির মাটিতে ওঁর আশীর্বাদ নিয়ে আমি জয়ী হব।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy