Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

উন্নয়নেই ভোট ভাগ্য

প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল প্রার্থী তথা পুরপ্রধানকে শুনতেও হচ্ছে উন্নয়ন সংক্রান্ত নানা অভিযোগ। তৃণমূল প্রার্থী তথা পুরপ্রধানকে না পেয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীকে প্রেমচাঁদ ঝা-কে সেই ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন অনেকে।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০১:০৪
Share: Save:

‘ভোট ফর ডেভেলপমেন্ট’।

খড়্গপুর (সদর) উপ-নির্বাচনে এই স্লোগান দিয়েই প্রচার করছে রাজ্যের শাসক দল। তাদের প্রার্থী প্রদীপ সরকার নিজে খড়্গপুরের পুরপ্রধান।

প্রতিপক্ষ বিজেপিও হাতিয়ার করছে পুরশহরের উন্নয়নকে। তাদের স্লোগান ‘ডেকোরেশন নেহি, ডেভেলপমেন্ট কে লিয়ে বিজেপি কো জিতায়ে’।

প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল প্রার্থী তথা পুরপ্রধানকে শুনতেও হচ্ছে উন্নয়ন সংক্রান্ত নানা অভিযোগ। তৃণমূল প্রার্থী তথা পুরপ্রধানকে না পেয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীকে প্রেমচাঁদ ঝা-কে সেই ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন অনেকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষোভ তৃণমূলের স্থানীয় কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে।

তৃণমূল অবশ্য সে সবে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাদের অভিযোগ, বিরোধীদের চক্রান্তেই বিক্ষোভ হচ্ছে। তাদের প্রচার আটকাতেই এই কৌশল নিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূলের দাবি, পুরসভার হাত ধরে গত কয়েক বছরে রেলশহরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। শ্মশানঘাট সেজেছে। পথবাতি জ্বলেছে। দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও জানিয়ে দিয়েছেন, স্থানীয় বিষয়ে জোর দিয়েই খড়্গপুর উপ-নির্বাচনে জিততে হবে। একই সঙ্গে তিনি রেলের অনুন্নয়ন নিয়েও সরব হয়েছেন। তৃণমূল যে বিষয়গুলিকে সামনে রেখে জিততে চাইছে, সেগুলি নিয়েই পাল্টা প্রচার করছে গেরুয়া শিবির। তাদের অভিযোগ, আলোকসজ্জা ছাড়া শহরে কোনও উন্নয়ন হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে বিজেপির পালে হাওয়া টেনে সামনে আসছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের ক্ষোভ। গত ৭ নভেম্বর ১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে গিয়েছিলেন প্রদীপ। সেখানে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা শুনতে হয় তাঁকে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, রাস্তা, নিকাশি থেকে আবাস যোজনায় কাজ হয়নি। বিক্ষোভ যে হয়েছিল, সেটা স্থানীয় তৃণমূল নেতা আশিস সেনগুপ্ত মেনেও নিয়েছেন। ক্ষোভ কিন্তু থামেনি। গত ১১ নভেম্বর ১২ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয় মহিলাদের একাংশ রাস্তা ও সুষ্ঠু নিকাশির দাবিতে পথ অবরোধ করতে যান। পুলিশের সক্রিয়তায় অবরোধ শেষপর্যন্ত না হলেও ওই এলাকায় প্রচারে গিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পুরপ্রধানকে। তখন তিনি প্রশ্ন তোলেন, গত ৩০ বছর ধরে এমন অভিযোগ কেন তোলা হয়নি। দাবি করেন, তাঁর প্রচার ভেস্তে দিতে বিজেপি-সিপিএম চক্রান্ত করেছে।

পুর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝা-কেও। ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে গিয়ে জল জমা নিয়ে স্থানীয় মহিলাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। এর পরে অনুন্নয়নের অভিযোগ আরও বেশি করে তুলছে বিজেপি। প্রেমচাঁদের কটাক্ষ, ‘‘উনি (পুরপ্রধান) তো নিজেকে উন্নয়নের কান্ডারি বলছেন। এ দিকে মানুষ ওঁকে উন্নয়নের আসল চেহারা দেখাচ্ছেন। নর্দমা নেই, রাস্তা নেই, জলে রাস্তা ভাসছে। অবস্থা এমনই যে কে কোন দলের নেতা সেটা মানুষ বুঝতে চাইছে না। তাই আমাদেরও প্রচারে গিয়ে এসব কথা শুনতে হচ্ছে।”

তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপের অবশ্য দাবি, “২০১৬ থেকে রেলশহরে বিজেপির বিধায়ক ছিলেন। এখন তো সাংসদও রয়েছেন। তার পরেও এই এলাকায় কোনও উন্নয়ন বিজেপি করেনি। এই শহরে আলো থেকে রাস্তাঘাট, শ্মশান সবকিছুই পুরসভা ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।’’ তবে নিকাশি সমস্যা যে পুরোপুরি মেটানো যায়নি সেকথা মেনে নিয়েছেন পুরপ্রধান। তাঁর প্রতিশ্রুতি, ‘‘আইআইটিকে দিয়ে মাস্টার প্ল্যান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy