—প্রতীকী চিত্র।
শারদোৎসবের আগেই বাড়ল কেরোসিন তেলের দাম। চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে কেরোসিনের দাম বেড়েছে সাড়ে চার টাকা। ফলে রাজ্যে কেরোসিনের দাম বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। বর্তমানে ডিলারদের কাছ থেকে কেরোসিন তেল পেতে গেলে গ্রাহকদের খরচ করতে হচ্ছে লিটারপিছু ৮১ থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত। কেরোসিনের দামের সঙ্গে পরিবহণ এবং অন্য খরচ যুক্ত হয়ে এই দামেই ডিলারদের থেকে কেরোসিন পাচ্ছেন ক্রেতারা। গত তিন মাসে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে গরিবের এই জ্বালানির দাম। অগস্ট মাসে কেরোসিন তেলের দাম বেড়েছিল ৬ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে এক ধাক্কায় এগারো টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। আর এ বার তার উপর আরও সাড়ে চার টাকা যোগ হয়েছে। গত তিন মাসে রাজ্যে কেরোসিন তেলের দাম ২১ টাকা বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। বার বার কেরোসিন তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ কেরোসিন তেল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা গত সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। সেই বৈঠকের পরেও কেরোসিন তেলের দাম কমার কোনও আশ্বাস মেলেনি বলেই খবর।
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে কেরোসিন তেলের উপর ভর্তুকি তুলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেরোসিন তেল ডিলারদের অভিযোগ, সেই সময় বলা হয়েছিল আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যেমন হবে, দেশে কেরোসিন তেলের মূল্য সে ভাবে নির্ধারিত হবে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে সে কথা রাখা হয়নি। বর্তমানে যে দামে কেরোসিন পাওয়া যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দাম অতটা নয় বলে দাবি করেছে পশ্চিমবঙ্গ কেরোসিন তেল ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন। সাম্প্রতিক কালে কেরোসিন তেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও দায়ের হয়েছিল। গত ১২ সেপ্টেম্বর সেই মামলার রায়ে বিচারপতি বিবেক চৌধুরী নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, কেরোসিন তেলের দাম নির্ধারণ করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে স্পষ্ট নীতি তৈরি করতে হবে। কিন্তু সেই রায়ের পরেও এক তরফা ভাবে কেরোসিন তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠছে।
দেশের এখনও ৮০ শতাংশ গরিব মানুষ কেরোসিন তেলের উপর নির্ভর বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গ কেরোসিন তেল ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত। হেঁশেলে জ্বালানি থেকে শুরু করে রাতের অন্ধকারে গরিবের ঘরে এখনও কেরোসিন তেলের আলোর ব্যবহার হয়, বলে দাবি করেছেন তিনি। অশোক বলেন, “আসলে কেরোসিন তেলের ডিলাররা রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের ভোট ব্যাঙ্ক নন। তাই কেন্দ্র বা রাজ্যের শাসকদল কোনও পক্ষেরই আমাদের দিকে নজর নেই। এ ভাবে প্রতি দিন কেরোসিন তেলের দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মতো ডিলাররা শেষ হয়ে যাবে। আর আমাদের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে এক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। সেই কর্মসংস্থানের দিকটিও শেষ হয়ে যাবে। এই বিষয়টি যেন কেন্দ্র এবং রাজ্যের দুই সরকার মনে রাখেন।” কেন্দ্রীয় সরকারের একাংশের যুক্তি, গরিব মানুষের কথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উজ্জ্বলা যোজনা শুরু করেছেন। যেখানে দেশের গরিব মানুষ বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছেন। কেরোসিন তেল ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের পাল্টা যুক্তি, গ্যাসের সংযোগ বিনামূল্যে পাওয়া গেলেও, ৯০০ টাকা খরচ করে গরিব মানুষের পক্ষে প্রতি মাসে রান্নার গ্যাস কেনা সম্ভব নয়। এটা যে কোনও গরিব মানুষের কাছে বিলাসিতার বস্তু। তাই কেরোসিন তেলের দামের বিষয়টি অবশ্যই কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনার মধ্যে রাখা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy