Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

জোড়া মামলা থানারপাড়ায়, সভায় কৈলাস

ভোট প্রায় দোরগোড়ায়। শনিবার প্রচার শেষ হয়ে যাবে। বিজেপি তাই প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ দিন দলীয় প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারের সমর্থনে করিমপুর পুরনো বাসস্ট্যান্ড চত্বরের জনসভা করতে আসেন দলের পশ্চিমবঙ্গ পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

‌নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমপুর-কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৬
Share: Save:

বিজেপির প্রচারে তৃণমূল কর্মীদের হামলার অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আবার প্রচারের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও সভা করায় বিজেপির বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও বুধবার রাত পর্যন্ত কোনও পক্ষেরই কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

ভোট প্রায় দোরগোড়ায়। শনিবার প্রচার শেষ হয়ে যাবে। বিজেপি তাই প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ দিন দলীয় প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারের সমর্থনে করিমপুর পুরনো বাসস্ট্যান্ড চত্বরের জনসভা করতে আসেন দলের পশ্চিমবঙ্গ পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সঙ্গে ছিলেন মুকুল রায়, ভারতী ঘোষ, মাফুজা খাতুন, অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্র এবং বিজেপির তিন বিধায়ক। সভায় ভাল ভিড় দেখে নেতারা উচ্ছ্বসিত। কৈলাস প্রতিশ্রুতি দেন, তাঁদের প্রার্থী জিতলে বিজেপির মূল লক্ষ্য হবে করিমপুরে চার লেনের রাস্তা ও নতুন রেলপথ তৈরির জন্য দরবার করা। কৃষিপণ্য মজুতের জন্য হিমঘরও তৈরি হবে।

মুকুলের দাবি, ‘‘এই রাজ্যে কাজ না থাকায় এখান থেকে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করতে যাচ্ছেন। ওঁরা এনআরসি নিয়ে সংখ্যালঘুদের ভুল বোঝাচ্ছেন। তৃণমূল এক সময়ে জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়েছিল। এখন ভোট কমতে কমতে সেই স্বীকৃতি হারিয়েছে।’’

মঙ্গলবার থানারপাড়ার দোগাছি আনাজ হাটে প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হন বিজেপির নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে ছিলেন টালিগঞ্জের অভিনেত্রী রিমঝিম মিত্র ও রূপাঞ্জনা মিত্র। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা সভায় হামলা করে। দুই অভিনেত্রীকে প্রথমে ঘরে লুকিয়ে রাখতে হয়। পরে তাঁদের সেখান থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। বিজেপির জেডপি ১-এর সাধারণ সম্পাদক প্রহ্লাদ সরকারকেও মারধর করা হয়। রিমঝিমের অভিযোগ, ‘‘কিছু লোক যখন গোলমাল পাকায়, একটু দূরেই পুলিশ দাঁড়িয়েছিল। তারা কেউ এগিয়ে আসেনি। অন্ধকারে ভিড় থেকে বেরিয়ে আসার সময়েও অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করা হয়েছে। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে ফিরতে হয়েছে।’’

বিজেপির উত্তর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি মহাদেব সরকার জানান, ওই ঘটনায় এলাকার ১৫ জন তৃণমূল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও মুখ্য নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং অফিসার ও এই ভোটকেন্দ্রের সাধারণ ও পুলিশ পর্যবেক্ষককে জানানো হয়েছে। তার দাবি, নিয়ম মতো আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে সভার অনুমতি চাওয়া হলেও পুলিশ শেষ মুহূর্তে অনুমতি দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অনুমতি দেয়নি। পুলিশ শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। থানারপাড়া থানার আইসি-র বিরুদ্ধেও কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে বিজেপির করা অভিযোগের তালিকায় করিমপুর ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি রাজু মল্লিকের নামও রয়েছে। তবে রাজুর দাবি, এই ঘটনায় তৃণমূল কোনও ভাবেই জড়িত নয়। দুই অভিনেত্রীকে দেখার জন্য কিছু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তা সামাল দেওয়ার প্রস্তুতি বিজেপির ছিল না। সে কারণেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তা ছাড়া মাস দুয়েক আগেও ওখানে জয়প্রকাশ মজুমদারের উপস্থিতিতে বিজেপির একটি দলীয় সভায় দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গন্ডগোল হয়েছিল। তাঁর মতে, ‘‘বিজেপি প্রচার পাওয়ার জন্যই আমাদের নাম জড়াচ্ছে।’’ এ দিন মুর্শিদাবাদ যাওয়ার পথে কৃষ্ণনগরে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বলেন, ‘‘গত লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় সন্ত্রাস হয়েছিল। গোটা দেশের কাছে বার্তা গিয়েছিল যে এখানে সন্ত্রাস হয়। আমি চাই এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হোক। দেশের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে অনুরোধ করেছি যাতে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত প্রান্তের মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন। এই তিনটি উপ-নির্বাচনে যেন সন্ত্রাস না হয়, অশান্তি না হয়।’’

কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার কৃশানু রায় বলেন, ‘‘মঙ্গলবার থানারপাড়ায় বিজেপির প্রচারের অনুমতি ছিল না। সে কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজেপির করা হামলার অভিযোগেরও তদন্ত চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy