Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Kanhaiya Kumar

বাংলার মুখ হোক ঐশী, সওয়াল কানহাইয়ার

কলকাতায় এসে বৃহস্পতিবার তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ‘মিথ্যাচারে’র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিপিআইয়ের তরুণ নেতা।

হাতে হাত: সোমেন সিত্র, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে কানহাইয়া কুমার। বৃহস্পতিবার বিধাননগরে বিদ্যুৎ ভবনের প্রেক্ষাগৃহে।—নিজস্ব চিত্র।

হাতে হাত: সোমেন সিত্র, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে কানহাইয়া কুমার। বৃহস্পতিবার বিধাননগরে বিদ্যুৎ ভবনের প্রেক্ষাগৃহে।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৩৩
Share: Save:

বাম আন্দোলনে তরুণ তুর্কি হিসেবে তিনি নিজে উঠে এসেছেন। আরএসএস-বিজেপির বিরুদ্ধে এখন দেশ জোড়া আন্দোলনের স্রোতে বাম সংগঠনে নতুন মুখকে প্রাধান্য দেওয়ার পক্ষেই এ বার সওয়াল করলেন কানহাইয়া কুমার। হাতের কাছে উদাহরণ টেনে তাঁর মত, বাংলায় বামেদের মুখ হতে পারেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ঐশী ঘোষ।

কলকাতায় এসে বৃহস্পতিবার তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ‘মিথ্যাচারে’র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিপিআইয়ের তরুণ নেতা। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং এনআরসি, এনপিআর নিয়ে শাহেরা ‘ডাহা মিথ্যা’ বলছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনেই বিধাননগরে কানহাইয়ার মন্তব্য, ‘‘মোদী-শাহদের খেলা ছাত্র ও যুবরা ধরে ফেলেছেন। তাঁরা নাছোড় মেজাজে আন্দোলন করছেন। কিন্তু এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে সংগঠনের স্থবিরতা ছাড়তে হবে। ঐশী ঘোষদের মধ্যে এই মেজাজ আছে। মারের মুখে দাঁড়িয়ে ওরা মাঠে-ময়দানে লড়াই করতে পারে। ঐশীই হতে পারে বাংলার মুখ।’’ বেগুসরাইয়ে একটি কর্মসূচির অবসরে সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাকে তিনি বাম নেতৃত্বে স্থবিরতার কথা বলেছেন এবং রাজা তাতে সহমত বলেও কানহাইয়ার দাবি।

সিপিআইয়ের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও দেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রজিৎ গুপ্তের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এ দিন বিধাননগরে বিদ্যুৎ ভবনের প্রেক্ষাগৃহে আলোচনা-সভায় কানহাইয়ার পাশাপাশি ছিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। পরে ব্যারাকপুরে সমাজকর্মী, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মঞ্চের ডাকে জনসভাতেও বক্তা ছিলেন কানহাইয়া, সেলিম ও দীপঙ্করবাবু। ব্যারাকপুরে সভা বানচালের চেষ্টা এবং পাল্টা পোস্টার লাগিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগের জেরে ৮ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয় কানহাইয়া পৌঁছনোর আগেই।

ছাত্র-যুবদের হাত ধরে বাম ও নাগরিক আন্দোলনে যে গতি আসছে, তাকে মান্যতা দিয়ে বিদ্যুৎ ভবনের মঞ্চে কানহাইয়াকেই এগিয়ে দিয়েছেন সেলিম। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মহাভারতের গল্পেই আছে, কংসের অন্যায়ের ঘড়া যখন পূর্ণ হয়ে যায়, তখন অন্যায়ের অবসান ঘটাতে কানহাইয়ার আবির্ভাব হয়!’’ এনপিআর-এর মাধ্যমে যে কোনও নাগরিককে ‘সন্দেহজনক’ (ডাউটফুল) বলে চিহ্নিত করে দেওয়ার ‘মারাত্মক ক্ষমতা’ সরকার পেয়ে যাবে বলে মন্তব্য করে দীপঙ্করবাবু বলেছেন, ‘‘সেই দেশভাগের সময় থেকে, কৃষক আন্দোলন থেকে যে চেতনা বাংলায় দেখা গিয়েছে, তাকেই সঙ্গে করে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে আরএসএসের সাম্প্রদায়িক চক্রান্তের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’’ প্রদীপবাবুর আহ্বান, ‘‘মনোজগতে ধর্মের প্রাচীর তুলতে এসে বার্লিনের প্রাচীরের মতো ভেঙে দিতে হবে।’’

আর কানহাইয়া বিধাননগর এবং ব্যারাকপুরে জোড়া সভাতেই ডাক দিয়েছেন, ‘‘কাগজ আমরা দেখাব। ডিগ্রির কাগজ। সরকার সেই কাগজ দেখে চাকরি দিক!’’ এনপিআর-এনআরসি রুখতে অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গেই মানুষের কাছে তাঁর আর্জি, রাস্তায় নেমেই বিজেপি সরকারকে পিছু হঠতে বাধ্য করতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Kanhaiya Kumar Aishe Ghosh CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE