বুধবার সিপিআইয়ের সমাবেশে একসঙ্গে কানহাইয়া কুমার এবং জিগ্নেশ মেবাণী।—ফাইল চিত্র।
নজরকাড়া ভিড় দু’জনের টানেই। দু’জনেই বিজেপি-বিরোধিতার তরুণ তুর্কী। অথচ কলকাতায় একই মঞ্চে শোনা গেল দু’জনের ভিন্ন সুর!
দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বুধবার সিপিআইয়ের সমাবেশে একসঙ্গেই হাজির ছিলেন কানহাইয়া কুমার এবং জিগ্নেশ মেবাণী। বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন দু’জনেই। তবে মেবাণীর মত, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের রাজত্ব যে ‘অভূতপূর্ব’ পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তার মোকাবিলায় বামেদেরও ‘বেনজির জোট’ গড়ার কথা ভাবতে হবে। সরাসরি তৃণমূলের নাম না করলেও মেবাণীর ইঙ্গিত, বিজেপিকে পরাস্ত করতে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই থাকা উচিত বামেদের। সিপিআইয়ের জাতীয় পরিষদের সদস্য কানহাইয়া অবশ্য মেবাণীর তত্ত্ব খারিজ করে ওই মঞ্চেই বলে দিয়েছেন, ‘‘কেন্দ্রে মোদী যা করছেন, বাংলায় দিদিও তা-ই করছেন। দু’জনকেই হঠাতে হবে।’’
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সিপিআইয়ের সমাবেশে এ দিন ভিড় হয়েছিল ভালই। কানহাইয়ার টানেই এসেছিলেন তরুণ প্রজন্মের বেশ কিছু সমর্থক। মঞ্চ থেকে কানহাইয়ার নামার সময়ে হুড়োহুড়িও ছিল প্রবল। একক শক্তিতে জমায়েতের এমন চেহারায় উৎসাহিত গুরুদাস দাশগুপ্ত, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, মঞ্জুকুমার মজুমদারেরা। সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে, সংবিধান বাঁচাতে এবং রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরাতে লড়াই চালানোর ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
গুজরাতের নির্দল বিধায়ক জিগ্নেশ এ দিন ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জ্যোতি বসুর নেতৃত্বে বাম সরকারের ভূমি সংস্কারের। সেই সূত্রেই তাঁর বক্তব্য, গুজরাতে তারও আগে ভূমি বণ্টন হয়েছিল কিন্তু তার ফায়দা সব শ্রেণির মানুষ পাননি। বড় বড় জমির মালিক পটেলরা, তাঁদের জমিতে মজুর খেটেছেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। জিগ্নেশের সংযোজন, ‘‘ভারতীয় ঘরানায় নরেন্দ্র মোদীর ফ্যাসিবাদের বিরোধিতায় সেই গুজরাতেই হার্দিক পটেল এবং জিগ্নেশ মেবাণী এক হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী এবং বিএসপি জোট করছে। অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে বাংলায় বামেদেরও ভেবে দেখতে হবে নজিরবিহীন জোটে যাওয়া যায় কি না।’’ পরে কানহাইয়া অবশ্য জিগ্নেশের উল্টো মতে গিয়ে সরব হয়েছেন বাংলায় গণতন্ত্র ধ্বংসের অভিযোগ নিয়েই। পাশাপাশিই বিজেপিকে তুলোধোনা করে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র নেতার মন্তব্য, ‘‘ওরা রামের নামে রথের কথা বললেও ওটা আসলে নাথুরামদের রথযাত্রা!’’
কানহাইয়াকে নস্যাৎ করে তৃণমূল নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘উনি কোন দলের? সেই দলের অস্তিত্বই তো নেই! বাংলা সম্পর্কে কোনও ধারণাও ওঁর নেই। এটা তো ক্লাস রুম নয়। এখানে জল গরম করে লাভ হবে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy