জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ছবি: সংগৃহীত।
আদালতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কী বলবেন, গত কয়েক দিন ধরেই তা নিয়ে জোর জল্পনা ছিল বিভিন্ন মহলে। সেই জল্পনা আরও জল-বাতাস পেয়েছে নিজেকে ‘নির্দোষ’ বলে তাঁর দাবিতে। বনমন্ত্রী এ-ও বলেছিলেন, ‘‘চার দিন পর সব জানতে পারবেন।’’ তাতেই অনেকের মনে হয়েছিল, চার দিনের দিন, অর্থাৎ সোমবার আদালতে ‘বোমা ফাটাতে পারেন’ মন্ত্রী। হয়তো ‘দুর্নীতি’ সংক্রান্ত কোনও গুরুতর তথ্য বিচারকের সামনে তুলে ধরতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে সে রকম কিছুই ঘটল না। এজলাসে কার্যত নীরবই থাকলেন রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (রাজ্য-রাজনীতিতে যিনি বালু নামেই বেশি পরিচিত)।
সোমবার বালুকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করায় ইডি। আদালতে শুনানি চলাকালীন তাঁকে আরও সাত দিন ইডি হেফাজতে পাওয়ার আর্জি জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। আদালতে ইডির যুক্তি, বালু তিন দিন হাসপাতালে ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়নি। আর সেই কারণেই তাঁকে আরও সাত দিন নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আর্জি জানায় ইডি। সেই সঙ্গে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে উঠে আসা একের পর এক তথ্যও আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়। আদালত সূত্রে খবর, সেই গোটা সময় জুড়েই কার্যত চুপচাপ ছিলেন বালু। কারও কারও তাঁকে দেখে মনে হয়েছে, যেন অনেক কিছুই বলতে চাইছেন মন্ত্রী, কিন্তু বলতে পারছেন না!
বালুর আইনজীবীও তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করেননি সোমবার। তবে মন্ত্রীর কৌঁসুলি জানান, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রীর জন্য কম্যান্ড হাসপাতালে কোনও মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়নি। এ নিয়ে যখন কথা হচ্ছিল, শুধু সেই সময়েই মন্ত্রীকে আমতা আমতা করে বলতে শোনা যায়, ‘না, হয়নি...’। শুনানি-পর্ব শেষে জ্যোতিপ্রিয়কে আরও সাত দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। আপাতত ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে। আদালত চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বালু হাত নেড়ে বলেন, ‘‘সাত দিন পর আবার আসছি। সাত দিন, সাত দিন...।’’
আদালতে বালু কী বলবেন, তা নিয়ে জল্পনা মূলত তৈরি হয় গত শুক্রবার ইডি-র সঙ্গে হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষায় যাওয়ার পথে জ্যোতিপ্রিয়ের মন্তব্যে। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে দিন তিনেক আগে কমান্ড (সেনা) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে জ্যোতিপ্রিয় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘আমাকে চক্রান্ত করে বিজেপিকে দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। মমতা’দি ও অভিষেক সব জানেন। আমি এখন মুক্ত। আপনারা চার দিন পরে সব কিছু জানতে পারবেন।’’
সোমবার সকালে নিজেকে ‘নির্দোষ’ বলেও দাবি করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। সোমবার আদালতে পেশ করার আগে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য তাঁকে বার করা হয়। ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে জ্যোতিপ্রিয় তিন বার বলেন, “আমি নির্দোষ। আমি নির্দোষ। আমি নির্দোষ।” তার পরই জ্যোতিপ্রিয়কে বলতে শোনা যায়, “এরা যা করেছে, অন্যায়, অনৈতিক কাজ করেছে।” আদালতের উপর ভরসা রাখার ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “কোর্ট নিশ্চয়ই বিচার করবে।” তবে কে বা কারা ‘অন্যায়’ কিংবা ‘অনৈতিক’ কাজ করেছে, জ্যোতিপ্রিয়ের সোমবারের কথায় তা স্পষ্ট হয়নি। জল্পনা ছিল, তা নিয়েই কিছু একটা বলবেন মন্ত্রী। কিন্তু সে রকম কিছু ঘটল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy