রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র ।
সাত দিন পর আবার তিনি আসবেন। সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালত ছাড়ার সময় এমনটাই মন্তব্য করলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিক। সোমবার রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় বালুকে আবার সাত দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। আপাত ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে। আদালত চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বালু হাত নেড়ে বলেন, ‘‘সাত দিন পর আবার আসছি। সাত দিন, সাত দিন।’’
সোমবার রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় ইডি হেফাজতে থাকা বালুকে সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয়। আদালতে শুনানি চলাকালীন বালুকে আরও সাত দিন ইডি হেফাজতে পাওয়ার আর্জি জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। আদালতে ইডির যুক্তি, বালু তিন দিন হাসপাতালে ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়নি। আর সেই কারণেই তাঁকে সাত দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আর্জি জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এর পরেই বালুর এক আইনজীবী দাবি করেন, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রীর জন্য কম্যান্ড হাসপাতালে কোনও মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়নি। এই মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করার আর্জিও জানান তিনি।
ইডির আইনজীবী জানান, বালু তিন দিন বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেই সময় হাসপাতালে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। এর পর মন্ত্রীকে কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়। মন্ত্রীর জন্য যতটা সম্ভব করা যায়, তা যথাযথ ভাবে করা হয়েছিল বলেও ইডির দাবি।
উল্লেখযোগ্য যে, শুনানির সময় বালুর তরফে জামিনের জন্য কোনও রকম আবেদন জানানো হয়নি। অন্য দিকে, শুনানি চলাকালীন আদালতে উপস্থিত এক আইনজীবী দাবি করেন, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে।
প্রসঙ্গত, সোমবার আদালতে প্রবেশের সময় নিজেকে আরও এক বার মুক্ত বলে দাবি করেন বালু। তবে এ বার এই দাবির সঙ্গে জুড়ে নিলেন তদন্তকারী সংস্থা ইডিকেও। সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে ঢোকার আগে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “আমি মুক্ত। আমি মুক্ত। ইডি বুঝতে পেরেছে যে, আমি মুক্ত।” তবে কী প্রেক্ষিতে তিনি এই দাবি করেছেন, তা স্পষ্ট নয়।
সোমবার সকালে নিজেকে ‘নির্দোষ’ বলেও দাবি করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। সোমবার আদালতে পেশ করার আগে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য তাঁকে বার করা হয়। ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে জ্যোতিপ্রিয় তিন বার বলেন, “আমি নির্দোষ। আমি নির্দোষ। আমি নির্দোষ।”
তার পরই জ্যোতিপ্রিয়কে বলতে শোনা যায়, “এরা যা করেছে, অন্যায়, অনৈতিক কাজ করেছে।” এর পাশাপাশি আদালতের উপর ভরসা রাখার ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “কোর্ট নিশ্চয়ই বিচার করবে।” তবে কে বা কারা ‘অন্যায়’ কিংবা ‘অনৈতিক’ কাজ করেছে, জ্যোতিপ্রিয়ের সোমবারের কথায় তা স্পষ্ট হয়নি। জ্যোতিপ্রিয় জানান, তিনি ‘অসুস্থ’।
গত শুক্রবার ইডি-র সঙ্গে হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষায় যাওয়ার পথেও জ্যোতিপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের সামনে ‘দিন চারেক পরেই সবাই সব কিছু জানতে পারবেন’ বলে মন্তব্য করেন। জ্যোতিপ্রিয় এ-ও দাবি করেছিলেন যে, তিনি নির্দোষ। পাশাপাশি তাঁর দাবি ছিল, বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন। গত শুক্রবার বালু বলেন, “আমি চক্রান্তের শিকার। বিজেপি আমায় ফাঁসিয়েছে। মমতাদি-অভিষেক সব জানে।” তিনি দলের সঙ্গে রয়েছেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেছিলেন, “আমি দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব।” খুব তাড়াতাড়ি তিনি ছাড়া পাবেন বলেও দাবি করেন জ্যোতিপ্রিয়। নিজেকে ‘মুক্ত’ বলে দাবি করার পর জ্যোতিপ্রিয়কে খাপছাড়া ভাবে বলতে শোনা যায়, “আর চার দিন পর...।” এই মন্তব্যটি সম্পূর্ণ না করেই গাড়িতে উঠে যান তিনি। জ্যোতিপ্রিয়কে এ-ও বলতে শোনা যায় যে, “দু’দিনের মধ্যে সব প্রকাশ হবে।” এই দু’দিন এবং চার দিনের কথা জ্যোতিপ্রিয় কেন বললেন, তা অবশ্য স্পষ্ট হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy