বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টে মামলার সওয়াল কেন বাংলা ভাষায় করা যাবে না, সেই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার একটি মামলার শুনানির ফাঁকে এজলাসে বসে তিনি জানান, তাঁর এজলাসে বাংলা ভাষায় মামলা করা যাবে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কারও ইংরেজি বলতে সমস্যা থাকলে বাংলায় কথা বলতেই পারেন। আমার সঙ্গে যিনি ইংরেজিতে কথা বলবেন তাঁর সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলব। যিনি বাংলা বলবেন তাঁর সঙ্গে বাংলায় কথা বলব।’’ প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ শাসন শেষ হলেও দেশের নানা ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার প্রাধান্য আছে। কলকাতা হাই কোর্টে সওয়াল-সহ যাবতীয় কাজ ইংরেজিতেই হয়।
এ দিন এজলাসে বসে অন্য এক বিচারপতির দেওয়া রায়ের প্রসঙ্গে কয়েকটি কথা বলতে বলতে বাংলা ভাষার বিষয়টি উত্থাপন করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এক দিন এক আইনজীবী আমার এজলাসে মামলা করার সময় প্রথমে বাংলায় কথা বলে ফেলেন। বাংলা বলার জন্য তিনি আমার কাছে ক্ষমা চান। বাংলায় কথা বললে ক্ষমা চাইতে হয়? যেখানে নিজের মাতৃভাষা বলার জন্য ক্ষমা চাইতে হয় সেই দেশের অবস্থা তো খুব খারাপ। এখানে কেন বাংলা ভাষায় কথা বলা যাবে না? নির্দেশ তো ইংরেজিতেই হবে।’’
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, আদালতে নিত্যদিন বহু সাধারণ মানুষ মামলা করতে আসেন। আইনজীবী এবং বিচারপতির মধ্যে কী কথা হচ্ছে তা তাঁরা বুঝতেই পারেন না। তিনি জানান, ইলাহাবাদ হাই কোর্টে অ্যাডভোকেট ও বিচারপতি দু’জনেই মামলা চলাকালীন মাতৃভাষা হিন্দিতে কথা বলেন। তাই এখানে কেন বলা যাবে না? প্রসঙ্গত, আদালতের কোনও রায়ের প্রতিলিপি যাতে সাধারণ নাগরিকদের কাছেও বোধগম্য হয়, তার জন্য ইংরেজিতে লেখা রায়ের প্রতিলিপি বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে। আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, ইংরেজিতে মামলার নথি লেখা হলেও অনেকেই ইংরেজি বলায় বা জটিল বিষয় ইংরেজিতে সহজ করে বোঝাতে স্বচ্ছন্দ নন। বাংলায় কথা বলার অনুমতি পেলে তাঁরা আরও ভাল ভাবে সওয়াল করতে পারবেন। এর ফলে মামলাকারীদেরও উপকার হবে। তাঁর সমস্যার কথা আইনজীবী ঠিক মতো কোর্টে উপস্থাপন করতে পারছেন কি না, তা-ও বহু মামলাকারী সহজে বুঝতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy