Advertisement
E-Paper

গ্রুপ-ডি মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে, স্থগিতই রইল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশে তা সাময়িক ভাবে স্থগিত হয়ে যায়। ফলে কার্যকর হয়নি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ।

image of Justice Abhijit Gangopadhyay

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশে তা সাময়িক ভাবে স্থগিত হয়ে যায়। — ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ১৩:৫০
Share
Save

সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল গ্ৰুপ ডি মামলার শুনানি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি বুধবার। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি পিছিয়ে দেয়।

আরও এক বার গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলার শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশে তা সাময়িক ভাবে স্থগিত হয়ে যায়। ফলে কার্যকর হয়নি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ। এই অবস্থায় গ্ৰুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের নজর শীর্ষ আদালতের দিকে।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলাটির শুনানি ছিল। সেখানে আগেই চাকরিচ্যুতদের এক আইনজীবী বিচারাধীন বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের টিভি সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এর আগে নিয়োগ সংক্রান্ত দু’টি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে সরানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এখন চাকরিপ্রার্থীদের আশঙ্কা, এই মামলার ক্ষেত্রেও একই যুক্তি দেখাতে পারেন চাকরিচ্যুতরা। যদিও এমন ধারণার কথা আগেই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ও।

২০১৬ সালে গ্ৰুপ ডি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন লক্ষ্মী টুঙ্গা-সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী। এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে জানায়, তদন্তে গাজিয়াবাদের নাইসা (ওএমআর শিট মূল্যায়নকারী সংস্থা) থেকে ৪৪৬৫টি ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে ২,৮১৯ জন পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিটে কারচুপি রয়েছে। এই তথ্য যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনেও। সিবিআইয়ের দেওয়া তথ্য যাচাই করে এর সত্যতা স্বীকার করে এসএসসি। তারা জানায়, মোট ২৮২৩ (২৮১৯ এবং পরে আরও ৪ জনের ওএমআর) জনের মধ্যে ১,৯১১ জনকে চাকরির সুপারিশপত্র দেওয়া হয়। তাঁরা এখন চাকরি করছেন। অর্থাৎ, ১,৯১১ জন বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন তা স্বীকার করে নেয় এসএসসি।

গত ৩১ জানুয়ারি হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তে উঠে আসা সব পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে এসএসসি। সেখানে ১,৯১১ জনের ওএমআর শিটও ছিল। দেখা যায়, কম নম্বরের পাশাপাশি, সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন এমন নামও উঠে আসে। এই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, এসএসসি-র কথা থেকেই স্পষ্ট এই নিয়োগেও দুর্নীতি হয়েছে। তৎকালীন এসএসসির চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের আমলে এই অনিয়ম হয়েছে। বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার কারণে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ১,৯১১ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন। তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেয় আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশ ছিল, ১,৯১১ জনের চাকরি বাতিলের ফলে যে শূন্যস্থান তৈরি হবে, সেখানে ওয়েটিং লিস্ট থেকে যোগ্যদের বাছাই করে নিয়োগ করতে হবে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, দুর্নীতি করে যোগ্যদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। তাই যাঁরা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন তাঁদেরই চাকরি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কারণ, দুর্নীতি না হলে ওয়েটিং তালিকার যোগ্যরা চাকরি পেতেন। প্রসঙ্গত, বাগ কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে আগেই ৬০৯ জনের চাকরি বাতিল হয়। সেই শূন্যপদেও নিয়োগ করতে নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরিচ্যুতরা। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বেতন ফেরতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। কিন্তু চাকরি বাতিল এবং সেই স্থানে মেধাতালিকা থেকে নিয়োগ করার উপর সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে পরিবর্তন করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল-সহ চাকরিচ্যুতদের একাংশ। তাঁদের দাবি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সকলের বক্তব্য না শুনেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। যদিও এই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, যে সংস্থা চাকরি দিয়েছে (অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে এসএসসি) তারাই স্বীকার করে নিয়েছে কারচুপি হয়েছে। তাই এই মামলায় সবার বক্তব্য শোনা সময়ের অপচয় ছাড়া কিছু নয়। মূল মামলাকারীর আইনজীবী এবং এসএসসির যুক্তি, ওএমআর শিট ওয়েবসাইটে আপলোড করার সময়ও কেউ আপত্তি করেননি। সেখানে দেখে নিজের ওএমআর শিট নয় বলে কেউ দাবিও করেননি। চাকরি যেতেই কোর্টে ছুটে এসেছেন। পাল্টা চাকরিচ্যুতদের এক আইনজীবীর দাবি, সিবিআইয়ের উদ্ধার করা ওএমআর শিটগুলির সত্যতা (অথেন্টিকেশন সার্টিফিকেট) যাচাই করা হয়নি। তা ছাড়া কোনও নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে সেখান থেকে আর নিয়োগ করা যায় না। নতুন করে মেধাতালিকা (প্যানেল) প্রকাশ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট অনেক রায়ে এ কথা বলেছে। অথচ এ ক্ষেত্রে পুরনো তালিকা থেকেই চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

গত ৩ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট শূন্যপদে নিয়োগপ্রক্রিয়া (কাউন্সেলিং) শুরুর উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। স্থগিত হয়ে যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ। কাউন্সেলিংয়ের জন্য ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের আর ডাকা হয়নি। এই অবস্থায় তাঁরা চাকরি পাবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবুও আশা ছাড়ছেন না তাঁরা।

Group D Supreme Court Justice Abhijit Gangopadhyay Recruitment Scam

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।