বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেহরক্ষী বিশ্বম্ভর মণ্ডলের যে ১০ জন ‘ঘনিষ্ঠ’-এর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের নথি যাচাই করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার স্কুলে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, সমস্ত অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে হবে। অভিযুক্তেরা মেধাতালিকায় ছিলেন কি না, তা-ও যাচাই করতে হবে। পাশাপাশিই দেহরক্ষীর ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
রমেশ মালিক নামে প্রাথমিক শিক্ষক পদে এক চাকরিপ্রার্থীর মামলার ভিত্তিতে গত জুলাই মাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে একটি হলফনামা জমা পড়ে। ওই হলফনামায় বিশ্বম্ভরের ১০ জন ‘আত্মীয়’-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যাঁরা প্রাথমিক শিক্ষক হিসাবে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। কী ভাবে একই পরিবারের এত জন সদস্য একই বছরে একসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেলেন, তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তুলেছিলেন মামলাকারীর আইনজীবী।
সেই মামলায় বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরে বসে মামলাকারী ও পর্ষদের আইনজীবীরা অভিযুক্তদের চাকরির নথি খতিয়ে দেখবেন। ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে। বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ায় অভিযুক্ত ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আগেই সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার সিবিআই আইনজীবী জানান, এখনও পর্যন্ত আট জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাকি দু’জনের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সকল অভিযুক্তকেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘বাড়তি আর সময় দেওয়া যাবে না। এর পর যেন না শুনতে হয় জিজ্ঞাসাবাদ সম্পূর্ণ হয়নি।’’ উচ্চ আদালতের নির্দেশ, জিজ্ঞাসাবাদে কী জানা গেল, তা ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২১ সেপ্টেম্বর।
প্রসঙ্গত, বিশ্বম্ভরের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর থানার দিবাকরপুর পঞ্চায়েতের প্রথমখণ্ড জালপাই গ্রামে। তবে হাওড়ার ব্রজনাথ লাহিড়ী লেনে একটি বহুতলেও ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। সেখানেই তিনি থাকেন সপরিবার। অভিযোগ, পার্থ যে সময় শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তখন বিশ্বম্ভর তাঁর নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময়েই প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক হিসাবে চাকরি পান বিশ্বম্ভরের স্ত্রী রিনা, তাঁর দুই ভাই বংশীলাল ও দেবগোপাল। বিশ্বম্ভরের মাসতুতো ভাই পূর্ণ মণ্ডল, মাসতুতো বোন গায়ত্রী মণ্ডল, মেসোমশাই ভীষ্মদেব মণ্ডল, মাসতুতো জামাই সোমনাথ পণ্ডিত, শ্যালক অরূপ ভৌমিক, শ্যালিকা অঞ্জনা মণ্ডল, প্রতিবেশী অমলেশ রায়ও শিক্ষক পদে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy