কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
এজলাস থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারের টেবিল, সর্বত্র তিনি বার বার জানিয়েছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই চলবেই। এ বার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলকেই পাশে থাকার কথা বললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতির মামলায় হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার বারংবার সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে। কেন যাচ্ছে, তা অবশ্য তাঁর ‘জানা নেই’। তবে বিচারপতির মতে, রাজ্য সরকারেরও দুর্নীতির লড়াইয়ে পাশে থাকা উচিত।
এ দিন নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে মামলার আবেদনকারী কর্মপ্রার্থী সেতাবুদ্দিনের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, নিয়োগ পরীক্ষার ২৩ লক্ষ ‘ওএমআর শিট’ বা উত্তরপত্র পরীক্ষা করেছে সিবিআই। সেই তথ্য তারা এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দিয়েছে বলে কোর্টে জানিয়েছে। এ ছাড়াও ৯৫২ জনের অবৈধ নিয়োগের তথ্য এসএসসি-কে দিয়েছে সিবিআই।
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকপদে ১৮৩ জনের অবৈধ নিয়োগের কথা ইতিমধ্যেই হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে এসএসসি। তবে ওএমআর শিট খতিয়ে দেখে সিবিআই কোর্টে জানিয়েছে, অবৈধ ভাবে নিযুক্ত ৯৫২ জনের সন্ধান পেয়েছে তারা। ফিরদৌস জানান, কোর্টের নির্দেশে ৪০টি উত্তরপত্রের নমুনা সিবিআই তাঁদের দিয়েছিল। সেগুলিতে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক পরীক্ষার্থীরই নম্বর বাড়ানো হয়েছে। বিচারপতি জানান, আজ, বৃহস্পতিবার তিনি ফের এই মামলা শুনবেন। তার পরে অবৈধ ভাবে নিযুক্তদের তালিকা প্রকাশের ব্যাপারে নির্দেশ দিতে পারে কোর্ট।
স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে হাই কোর্টে বার বার ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য। প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতির মামলায় হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা অন্যতম অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্য। তিনি তৃণমূলের বিধায়কও বটে। চাকরি হারানো প্রার্থীরাও গিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। সর্বোচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ায় তাঁরা চাকরি ফিরে পেয়েছেন।
সম্প্রতি কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিষয়ে অতিরিক্ত শিক্ষকপদ তৈরি করে কার্যত অবৈধ ভাবে নিযুক্তদের চাকরি বাঁচানোর অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, কার বুদ্ধিতে ওই ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেটা খুঁজে বার করতে হবে সিবিআই-কে। রাজ্য সরকার সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েও ধাক্কা খায়। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে স্থগিতাদেশ পেয়েছে রাজ্য। সংশ্লিষ্ট অনেকের পর্যবেক্ষণ, সম্ভবত এই সব ঘটনার সূত্রেই এ দিন মন্তব্য করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
মামলাকারীদের আইনজীবী হিসেবে বামপন্থীরা নিয়োগে বাধা দিচ্ছেন বলে ইতিমধ্যেই কর্মপ্রার্থীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন। সেই প্রসঙ্গও এ দিন কোর্টে উত্থাপন করেন ফিরদৌস এবং বলেন, নিয়োগে বাধা নয়, তাঁরা চান অযোগ্যদের বদলে যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy