স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধি অনিকেত মাহাতো। — নিজস্ব চিত্র।
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের ১৫ জন প্রতিনিধিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠকে ডেকেছিল নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যসচিবের চিঠির পর আন্দোলনকারীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ১৫ নয়, ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়েই তাঁরা নবান্নে যাবেন। এই সিদ্ধান্তের কথা ইমেল মারফত মুখ্যসচিবকে জানানো হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বাসে করে তাঁরা নবান্নের উদ্দেশে রওনা দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্দোলনকারীদের চিঠি দেন মুখ্যসচিব। সেখানে বলা হয়, বিকেল ৫টায় নবান্নে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে রাজ্য সরকার। থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। আন্দোলনকারীদের ১৫ জন প্রতিনিধিকে বৈঠকে থাকতে হবে। বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার সম্ভব নয়। তবে স্বচ্ছতার জন্য তা রেকর্ড করা যেতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন মুখ্যসচিব।
নবান্নের এই চিঠি পাওয়ার পর জেনারেল বডির বৈঠক হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, চিকিৎসকেরা বৈঠক করতে নবান্নে যাবেন। তবে ১৫ নয়, যাবেন ৩০ জন প্রতিনিধিই।
সাংবাদিক বৈঠক করে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি অনিকেত মাহাতো বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে বার্তা এসেছে, তা আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। কিছু ক্ষণের মধ্যেই বেরোচ্ছি। আমাদের বক্তব্য ইমেল মারফত নবান্নে জানিয়েছি। আমাদের ৩০ জন প্রতিনিধি নবান্নে যাচ্ছেন। সরাসরি সম্প্রচারের দাবিও থাকছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যে ২৬টি মেডিক্যাল কলেজ। তাই প্রতিনিধির সংখ্যা ৩০ জনের কম হওয়া সম্ভব নয়। এই পথ মুখ্যমন্ত্রীরই দেখানো পথ। নবান্ন খোলা মনে আলোচনা চেয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের শুনানি, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার হয়। তা হলে জনগণের দাবি নিয়ে এই বৈঠকে লুকোনোর কী আছে? লুকোনোর কিছু নেই বলেই আমরা মনে করি। আশা করব, রাজ্য এই জায়গাটি বিবেচনা করবে। আমরা নবান্ন যাচ্ছি, সরাসরি সম্প্রচারের দাবি নিয়ে। আমরা দ্রুত সমাধান চাই।’’
গত মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন রাজ্যের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন তাঁরা। পালন করছেন কর্মবিরতি। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে চিকিৎসকদের কাজে ফেরার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু তার পরেও তাঁরা কাজে ফেরেননি। বরং ওই দিনই স্বাস্থ্য ভবন অভিযান করেন আন্দোলনকারীরা। সেই থেকে ধর্না চলছে। এর আগে পর পর দু’বার তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দু’দিন নবান্নে অপেক্ষা করে করে তাঁকে ফিরে যেতে হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের তরফে প্রথম থেকেই শর্ত ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে। তাঁরা ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে নবান্নের বৈঠকে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিব চিঠিতে জানান, এই দুই শর্ত মানা সম্ভব নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথাও চিঠিতে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আপাতত নবান্নে যাচ্ছেন চিকিৎসক-প্রতিনিধিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy