এনআরএসে অপর্ণা সেন।
রাজ্যে জুড়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় অচলাবস্থা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসার আবেদন জানালেন অভিনেত্রী-পরিচালিকা অপর্ণা সেন। আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কথা ভেবেই তা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। শুক্রবার এনআরএসে অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারদের জমায়েতে গিয়ে তিনি বলেন, ডাক্তারি পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের গায়ে হাত তোলা অত্যন্ত নিন্দনীয় একটি ঘটনা। এ জাতীয় ঘটনায় তিনি মর্মাহত।
অপর্ণার কথায়, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের হস্টেল থেকে বের করে দেওয়া হলে পরবর্তীতে তাঁরা যদি অন্যত্র চলে যান, রাজ্যের বাইরে চলে যান, তাহলে তা রাজ্যের ক্ষতি। খুব ভাল ছাত্রছাত্রী না হলে ডাক্তারি পড়াই যায় না।
অপর্ণা জুনিয়ার ডাক্তারদের কাছে আবেদন জানান, রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য, তবে প্রশাসনকে এ বিষয়ে নজর দিতে অনুরোধ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে এনআরএস হাসপাতালে এসে আলোচনার প্রস্তাবও দেন তিনি। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বয়সে অনেকটাই বড় এই পড়ুয়াদের তুলনায়। তাঁকে নিজের অবস্থান থেকে সরতেই হবে। তিনি অভিভাবকস্থানীয়া। তাই তিনি যদি কোনও কথায় আঘাতও পেয়ে থাকেন, তাঁকে এসে কথা বলতে হবে ছোটদের সঙ্গে। বুঝতে হবে, এই ছাত্রদের মনেও তাঁর প্রতি অভিমান হয়েছে।
আরও পড়ুন: এনআরএস-এর পাশে সারা দেশ, দিল্লির এইমস-সহ বিভিন্ন রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজে চলছে কর্মবিরতি
ডাক্তারদের কোনও নিরাপত্তা নেই। সিসিটিভি পর্যন্ত নেই। তাই এই পরিবেশে কাজ করাটা বেশ সমস্যার, বলেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক। অপর্ণা বলেন, ‘‘আপনাকে এনআরএসে আসতে হবে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। ওঁদের অভিমান হয়েছে। আপনি নিজে কেন একবারও এলেন না? আপনি পূর্ণমন্ত্রী, তাই প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে এই পরিস্থিতিতে পাঠালেও আপনাকে নিজেকেও পাশে এসে দাঁড়াতে হবে, আপনি ওঁদের মায়ের মতো।’’
আরও পড়ুন: অচলাবস্থা জারি, ধর্মঘটে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা, পরিষেবা শিকেয়
অপর্ণা ছাড়াও এনআরএসের পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ালেন অভিনেতা, নাট্য পরিচালক কৌশিক সেনও। তিনি বললেন, পড়ুয়াদের পাশে সবার আগে এসে দাঁড়ানো উচিত ছিল মুখ্যমন্ত্রীরই। কারণ তিনি বিশেষ কোনও দলের মুখ্যমন্ত্রী নন। রাজ্যের প্রতিটি মানুষের মুখ্যমন্ত্রী তিনি।
কৌশিক বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে পরিষেবা পায়, সেই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে ডাক্তারির পড়ুয়াদেরও, এটাই তিনি অনুরোধ করতে এসেছেন। তবে একইসঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে প্রতিবাদও। কারণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পড়ুয়ারাও।
কৌশিক, বোলানও পাশে দাঁড়ালেন এনআরএসে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের
কৌশিক একইসঙ্গে বলেন, ডাক্তারির মতো পরিষেবার জন্য প্রয়োজনে আরও বেশি টাকা বরাদ্দ করতে হবে স্বাস্থ্য দফদতরকে, প্রশাসনকে। প্রয়োজনে ক্লাবগুলোকে লক্ষ লক্ষ টাকা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। শিল্পীদের ক্ষেত্রেও টাকা বন্ধ করে বরং সেই টাকা সাধারণ মানুষের চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হোক।
কৌশিকের কথায়, সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার আগে, কোনও শিল্প কর্মে সরকারি অনুদান দেওয়ার চেয়েও সুস্থ থাকাটা অনেক বেশি জরুরি। তাই মু্খ্যমন্ত্রীকে এনআরএসের পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতেই হবে। অপর্ণা ও কৌশিকের সুরে সুর মিলিয়েছেন উপস্থিত অন্য বুদ্ধিজীবীরাও। এ দিন এনআরএসে উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র, লেখিকা-সমাজকর্মী বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, সমাজকর্মী মীরাতুন নাহার, রত্নাবলী রায়ও।
এনআরএস ছাড়াও কলকাতা ও রাজ্যের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ডাক্তারি পরিষেবা অমিল আজও। এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল কলজে, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেও স্বাস্থ্য পরিষেবা সেই সঙ্কটেই।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy