ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছিল, তিনি বেশ খানিকটা সময় বাংলায় ভাষণ দেবেন। সেই মর্মে ভাষণও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সোমবার শিলিগুড়িতে খুব বেশি সময় বাংলা বললেন না বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা। এর আগে বাংলায় এসে একাধিক ভাষণে যে ভাবে বাংলাভাষা ছুঁয়ে গিয়েছেন, এ বার তেমনই করলেন। মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে ‘হবে না, হবে না’ কটাক্ষ ছুড়লেন।
সেবক রোডের হোটেলে নড্ডার সাংগঠনিক বৈঠক ছিল রুদ্ধদ্বার। বৈঠক শেষে রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা উত্তরবঙ্গ জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সায়ন্তন বসু সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, মূলত বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েই কথা হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি’ এবং ‘কাটমানি’র অভিযোগ আরও বেশি করে তুলে ধরে নীচের স্তর পর্যন্ত প্রচার চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন নড্ডা। জানিয়েছেন, বুথ স্তরে বিজেপি-র সংগঠন আরও মজবুত করা দরকার। সায়ন্তন জানান, বিজেপি সভাপতি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কর্মীদের যে ‘অত্যাচার’ সহ্য করতে হচ্ছে, কেরল ছাড়া ভারতের আর কোথাও তা হয় না।
এদিন সন্ধ্যায় বেশ কিছু সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নড্ডা। গোর্খা, রাজবংশী, যদুবংশী, আদিবাসী, মতুয়া, বাগান শ্রমিক, কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের বক্তব্য শোনেন নড্ডা। তাঁদের দাবিদাওয়া জেনে নিয়ে নিজে বলতে ওঠেন। সেই ভাষণ সম্প্রচারিত হয়। ‘সামাজিক সমূহ’ নামে ওই কর্মসূচিতে দেওয়া দাবিদাওয়া পূরণের আশ্বাস দিয়ে নড্ডা আক্রমণের সুর চড়ান মমতার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘বিভাজন ঘটাও আর ক্ষমতায় টিকে থাকো, মমতাজির নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখন এটাই করছে।’’ সেই প্রসঙ্গেই মমতার সরকারের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের তুলনা টেনে নড্ডা দাবি করেন, ‘‘মোদীর নীতি হল সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলা এবং সকলের উন্নয়ন।’’
Addressing Samajik Samuha Meeting in Siliguri, West Bengal. https://t.co/4WtPOqSPrI
— Jagat Prakash Nadda (@JPNadda) October 19, 2020
নড্ডার ভাষণ শেষ হতেই রাজ্যসভার তৃণমূল দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘পুজোর সময়ে বাঙালিরা রাজনীতি দূরে সরিয়ে রাখেন। নড্ডা সে সব জানেন না। তিনি এবং তাঁর দল ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’-এ বিশ্বাসী। তাঁরাই মানুষে মানুষে বিভাজন ঘটিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। পুজোর সময় বাঙালিরা এসব ভেদাভেদ মানেন না’। নড্ডার আক্রমণের প্রেক্ষিতে ডেরেকের আরও কটাক্ষ, ‘নড্ডাজি ও তাঁর পরিবারকে পুজোর শুভেচ্ছা। এটা রাজনীতির বা কলহের সময় নয়। এখন আনন্দের সময়। এই সংস্কৃতি, এই সৌজন্য বাংলায় বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে গভীর ভাবে নিহিত’।
আরও পড়ুন: ত্রাতা আদালত, মহাবিপর্যয় থেকে রেহাই পেল কলকাতা ও বাংলা
নড্ডা প্রতিশ্রুতি দেন, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এক মাসের মধ্যে ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধি’ প্রকল্প চালু করা হবে এবং ৭৬ লক্ষ কৃষক তার সুফল পাবেন। তার পরেই ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের বিষয়ে বলতে গিয়ে নড্ডা বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান ভারতের কথা বললেই মমতাজি বলেন, হবে না। হবে না। হবে না। কী হবে না? হবে! এপ্রিল মাসে হবে! হবে! হবে!’’
আরও পড়ুন: জামিন পেলেন ‘পাগড়ি’ বিতর্কের বলবিন্দর
‘সামাজিক সমূহ’ কর্মসূচির দাবির মধ্যে সিএএ দ্রুত কার্যকর করার দাবিও ছিল। সে প্রসঙ্গে বিজেপি বলেছেন, ‘‘সিএএ আপনারা পাবেন। পাওয়া নিশ্চিত। এখন আইনটার বিধিগুলো তৈরি হচ্ছে। করোনার কারণে কাজ একটু আটকে গিয়েছিল। খুব তাড়াতাড়ি এর সুবিধা আপনারা পাবেন।’’ তাঁর কথায় স্পষ্ট, পশ্চিমবঙ্গে ভোটের মুখে দাঁড়িয়েও সিএএ নিয়ে পিছু হঠার ভাবনা তাঁদের নেই। বরং সিএএ-কেই অন্যতম ‘তাস’ করে তুলতে বিজেপি তৎপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy