Advertisement
E-Paper

সোমবারই যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ হবে, বলছে এসএসসির সূত্র, তার আগে কথা চান আন্দোলনকারীরা

সোমবার ‘যোগ্য-অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে এসএসসির। তবে শেষ পর্যন্ত ওই তালিকা প্রকাশিত হবে কি না, তা নিয়েও চলছে জল্পনা। এই পরিস্থিতিতে সোমবার এসএসসি দফতর পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এখনও সেখানেই অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের একাংশ।

চাকরিহারাদের প্রতিবাদ।

চাকরিহারাদের প্রতিবাদ। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৫৭
Share
Save

যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা সোমবার প্রকাশ করার কথা স্কুল সার্ভিস কমিশনের। সন্ধ্যার দিকে ওই তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে বলে খবর। সেই আবহে এসএসসি ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। সোমবার দুপুরে চাকরিহারারা করুণাময়ী থেকে মিছিল করে এসএসসি ভবনে গিয়েছেন। তাঁরাই জানালেন, যত ক্ষণ তালিকা প্রকাশ্যে না-আনা হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত এসএসসি ভবনের সামনেই অবস্থানে বসে থাকবেন তাঁরা। সেই তালিকার বয়ান কী হবে, বা তালিকায় তাঁরা সন্তুষ্ট কি না, সে সব দেখার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষকদের অভাব দিয়েছে। সেই ঘাটতি মিটিয়ে কী ভাবে স্কুলগুলির ছন্দ স্বাভাবিক রাখা হবে, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় শিক্ষা দফতর। এমতাবস্থায় সরকারি স্কুলে কর্মরত নিয়মিত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন পাওয়া নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে স্কুল শিক্ষা দফতরের কমিশনার অরূপ সেনগুপ্তকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি।

এসএসসির ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেল অনুসারে ‘দাগি’ নন এমন শিক্ষকদের আপাতত স্কুলে যাওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে শিক্ষাকর্মীদের জন্য পূর্বের রায়ই বহাল রয়েছে। সোমবার ‘যোগ্য-অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে এসএসসির। তবে শেষ পর্যন্ত ওই তালিকা প্রকাশিত হবে কি না, তা নিয়েও চলছে জল্পনা। এই পরিস্থিতিতে সোমবার এসএসসি দফতর পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বেলা ১২টা নাগাদ সল্টলেক করুণাময়ী থেকে মিছিল শুরু হয়। সল্টলেকে পৌঁছোন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, যোগ‍্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ এবং গ্রুপ-সি গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মী মঞ্চের প্রতিনিধিরা। দুপুর দেড়টা নাগাদ সেই মিছিল এসএসসি দফতরের সামনে পৌঁছোয়। কমিশন তালিকা প্রকাশ না-করা পর্যন্ত এসএসসি দফতরের সামনেই অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন চাকরিহারারা।

এ বিষয়ে চাকরিহারাদের সংগঠন ‘যোগ‍্য শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী অধিকার মঞ্চের’ আহ্বায়ক চিন্ময় মণ্ডল বলেন, “একটি মাত্র দাবিতে অবস্থান হচ্ছে না। ফলে তালিকা প্রকাশ্যে এলেই যে আন্দোলন উঠে যাবে, তা নয়। তালিকার বয়ান, তাতে কী রয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট কি না, সে সব দিক বিবেচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রয়োজনে রাস্তা বন্ধ করে একটানা অবস্থানও চলতে পারে।” চাকরিহারাদের মঞ্চের আর এক প্রতিনিধি মহম্মদ আবদুল্লা আল মঞ্জুম বলেন, ‘‘শুধু তালিকা প্রকাশই নয়, বরং সেই তালিকার বয়ান কী রয়েছে, তাতে এসএসসি নিজেদের দোষ স্বীকার করছে কি না, সে সব দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

এরই মাঝে শোনা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় যোগ্যদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে পারে এসএসসি। কাউন্সেলিংয়ের চতুর্থ ধাপ পর্যন্ত তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে। এর পরেই এসএসসি ভবনের সামনে শুরু হয়ে যায় উত্তেজনা। আন্দোলনকারীদের দাবি, আটটি দফায় কাউন্সেলিং হয়েছে। তা হলে কেন সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ্যে আনা হবে না? কাউন্সেলিংয়ের প্রতিটি দফা থেকে দু’জন করে প্রতিনিধি এসএসসির দফতরে ঢুকে কথা বলতে চাইছিলেন। তা নিয়ে এসএসসি ভবনের সামনে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শেষমেশ অবশ্য ভিতরে যান ১৩ জনের প্রতিনিধি দল। অন্য দিকে, সোমবার বিকেলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠকে বসার কথা চাকরিহারা আন্দোলনরত শিক্ষাকর্মীদের। সে জন্য নিবেদিতা ভবনে গিয়েছেন চার জন গ্রুপ-সি ও চার জন গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মী।

প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর থেকেই চাকরিহারারা দাবি তুলেছিলেন, যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হোক। এই দাবিতে গত ১১ এপ্রিল বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে ছিলেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। ওই দিন বৈঠক থেকে বেরিয়ে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন, ২১ এপ্রিলের মধ্যে ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশের বিষয়ে তাঁরা আশ্বাস পেয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যও জানান, আইনি পরামর্শ নিয়ে ওই দিনের মধ্যে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করার চেষ্টা করবে এসএসসি। এখন সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন চাকরিহারারা।

সংক্ষেপে
  • ২০১৬ সালের এসএসসিতে নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট। বলল, পুরো প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে। ওই নিয়োগপ্রক্রিয়ার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
  • এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাই কোর্ট এই সংক্রান্ত শুনানির পর ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগপ্রক্রিয়াই বাতিল করে দিয়েছিল।
  • রাজ্যের ২৬ হাজার চাকরি (আদতে ২৫,৭৫২) বাতিল করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
Bengal SSC Recruitment Case SSC Sit in Protest

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}