প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পেলেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এর আগে প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত ইডির মামলায় জামিন পেলেও সিবিআইয়ের মামলায় জামিন হল না রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর।
বৃহস্পতিবার বিচার ভবনে সিবিআইয়ের মামলায় পার্থের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। আদালতের পর্যবেক্ষণ, চার্জশিট এবং যাবতীয় তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এটা স্পষ্ট যে, নিয়োগ মামলায় সরাসরি যোগ রয়েছে পার্থের। আত্মপক্ষ সমর্থনে যথাযথ কোনও যুক্তিও দেখাতে পারেননি তিনি। তা ছাড়া, পার্থকে নিয়োগ দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অন্যতম ‘মাথা’ বলেও চিহ্নিত করেছে আদালত। বিচারকের যুক্তি, এই মূহূর্তে তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। এখন পার্থকে জামিন দেওয়া হলে তদন্তপ্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল ওই মামলায় রায় ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই দিন বিচারক না আসায় শেষমেশ রায় ঘোষণা স্থগিত রাখা হয়। জানানো হয়, ১৭ এপ্রিল এ বিষয়ে রায় দেবে আদালত। সেই মতো বৃহস্পতিবার পার্থের জামিনের বিপক্ষে রায় দিলেন বিচারক।
আরও পড়ুন:
গত ৩ এপ্রিল পার্থের জামিন মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল। সে দিন আদালতে পার্থের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী দাবি করেছিলেন, পার্থের নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া, অনেক দিন ধরে এই মামলায় পার্থের নাম আসেনি। কোনও রকম জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি তাঁকে। তা সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর মক্কেলকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। অথচ বাকিদের অনেকেই অল্প সময় হেফাজতে থাকার পর ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। এর পরেই যে কোনও শর্তে পার্থের জামিনের আবেদন করেছিলেন আইনজীবী।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করা হয় ২০২২ সালে। প্রাথমিক মামলায় গত বছরের অক্টোবরে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা যে চার্জশিট জমা দিয়েছে, তার ছত্রে ছত্রে রয়েছে পার্থের নাম। প্রাথমিকে ইডির মামলা থেকে আগেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন পার্থ। তবে সিবিআইয়ের মামলা এখনও চলছে। উল্লেখ্য, সিবিআইয়ের চার্জশিটে অভিযুক্তের সংখ্যা ১১ জন। তার মধ্যে ৮ জন ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। শুধু পার্থের জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই আদালতে জানিয়েছিল, তাঁর নেতৃত্বেই নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। তিনিই ছিলেন ‘মূল মাথা’। তাঁর তৎকালীন ওএসডি-ও গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হলে তদন্ত ব্যাহত হতে পারে, এই যুক্তিতেই এত দিন জামিনের বিরোধিতা করছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এ বার তাতে সায় দিল আদালতও।