বুধাবর আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে জীবনকৃষ্ণ সাহা। — নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রে সরকার গড়বে তৃণমূল সমর্থিত জোট ‘ইন্ডিয়া’ই। জামিন পাওয়ার পরের দিন আদালতে গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন তৃণমূল বিধায়ক তথা নিয়োগ ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত জীবনকৃষ্ণ সাহা। বুধবার জামিন পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল জীবনকৃষ্ণকে। সেখান থেকেই ভোটের ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি। লোকসভা ভোটে বাংলায় তৃণমূল কতগুলি আসন পাবে, তা-ও বলে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার জীবনকৃষ্ণের জামিন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রেসিডেন্সি জেলে বসে সেই খবর পেয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক। তবে জামিন হলেও এখনও মুক্তি পাননি তিনি। বেশ কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হচ্ছে। প্রক্রিয়া মিটলে জেল থেকে বেরোতে পারবেন। বুধবার জামিন পরবর্তী তেমনই কিছু প্রক্রিয়ার জন্য তাঁকে আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেখানে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা জীবনকৃষ্ণকে প্রশ্ন করেন, ‘‘ভোট কেমন হয়েছে? কী মনে হচ্ছে?’’ উত্তরে জীবন বলেন, ‘‘ভোট ভাল হয়েছে। রাজ্যে ৪২টি আসনই পাবে তৃণমূল।’’ এর পর তাঁকে কেন্দ্রের ফল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জীবন বলেন, ‘‘কেন্দ্রে আমরাই সরকার গড়ব। আমাদের সরকার হবে। আমি আজ মুক্তি পেলে কাল থেকেই দলের কাজ শুরু করে দেব।’’ উল্লেখ্য, তৃতীয় দফায় জীবনকৃষ্ণের এলাকায় ভোট হয়ে গিয়েছে। ৭ মে ছিল মুর্শিদাবাদে ভোটগ্রহণ। তার ঠিক পরের দিনই তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।
জামিন পেয়ে কেমন লাগছে? প্রশ্নে জীবনকৃষ্ণের উত্তর, ‘‘সত্যের জয় হয়েছে। জামিন পেয়ে ভাল লাগছে। একটাই কথা বলব, সব ক্রমশ প্রকাশ্য। ধীরে ধীরে প্রকাশ পাবে সব।’’ এ ছাড়া, আদালত চত্বর থেকে সন্দেশখালি প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন বড়ঞার বিধায়ক। বলেন, ‘‘দেখছেন তো, সব বিজেপির চক্রান্ত। সব তো ধরা পড়ে গিয়েছে। যাঁরা ধর্ষণ ইত্যাদির অভিযোগ করেছিলেন, তাঁরাই তো ক্যামেরার সামনে আবার বলছেন সব মিথ্যা। আগেও বার বার প্রমাণিত হয়েছে, বিজেপি সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতিগ্রস্ত। মানুষ তা প্রমাণ করে দিয়েছে।’’ তবে সন্দেশখালির স্টিং ভিডিয়ো প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘‘সেটা তদন্তসাপেক্ষ ব্যাপার।’’
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত জীবনকৃষ্ণকে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। জামিনের আবেদন নিয়ে তিনি প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে জীবনের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তার পরেই জামিন চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন জীবন। তাঁর গ্রেফতারিও ছিল স্মরণীয়। কারণ, সিবিআই বড়ঞায় তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেলে তিনি মোবাইল ফোন পাশের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। যা উদ্ধার করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের। দিনের পর দিন ধরে পুকুরে তল্লাশি চলে। ছেঁচে ফেলা হয় পুকুরের সমস্ত জল। পরে মোবাইল উদ্ধার হলেও তার মধ্যে থাকা তথ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই মোবাইল জলে ফেলা নিয়ে বুধবারও প্রশ্নের মুখে পড়েন জীবন। কিন্তু বলেন, ‘‘বিষয়টা বিচারাধীন। তাই এটা নিয়ে এখন কিছু বলতে পারব না।’’
মঙ্গলবার সেই জীবনকৃষ্ণকে জামিন দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে বেশ কিছু শর্ত মানতে হবে তাঁকে। জীবনকৃষ্ণকে মোট ছ’টি শর্তে জামিন দেওয়া হয়েছে। তাঁর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা সেই শর্তগুলি জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy