Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Maoist Leader

Jhargram - Maoist: কিসানদা ধৃত, পুলিশি তৎপরতা জঙ্গলমহলেও

সীমানাবর্তী প্রত্যন্ত জঙ্গল এলাকায় পর্যটক-সহ বহিরাগত কারা আসছেন, তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে জেলার গোয়েন্দা শাখা।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২১ ০৭:২৭
Share: Save:

শীর্ষনেতা কিসেনজির মৃত্যুর দশম বর্ষে এ রাজ্যের জঙ্গলমহলে নাশকতার ছক কষতে পারে মাওবাদীরা— কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে এমন সতর্কবার্তা ছিলই। এ বার মাওবাদী শীর্ষনেতা প্রশান্ত বসু ওরফে ‘কিসানদা’ ঝাড়খণ্ড পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পরে ঝাড়গ্রাম জেলার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সীমানাবর্তী প্রত্যন্ত জঙ্গল এলাকায় পর্যটক-সহ বহিরাগত কারা আসছেন, তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে জেলার গোয়েন্দা শাখা।

জেলার পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ মানছেন, ‘‘এলাকায় নিয়মিত নজরদারি ও তল্লাশি হচ্ছে। পড়শি রাজ্যের সীমানাবর্তী এলাকাগুলিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।’’ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলে মাওবাদী সংগঠনের কাজ নতুন করে শুরুর চেষ্টা হচ্ছে। প্রশান্তকে জেরা করে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে। রাজ্যের এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের এখানে ওই মাওবাদী নেতার নামে বা ছদ্মনামে কী কী মামলা রয়েছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরে প্রয়োজনে তাঁকে জেরার জন্য হেফাজতে চাওয়া হতে পারে।’’

শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলার কান্দ্রা থানা এলাকায় একটি গাড়িতে যাওয়ার সময়ে নাকা-পুলিশের হাতে সস্ত্রীক ধরা পড়েন সিপিআই (মাওবাদী)-এর প্রবীণ পলিটবুরো সদস্য প্রশান্ত। তাঁর স্ত্রী শিলা মারান্ডিও অন্যতম শীর্ষ মাওবাদী নেত্রী। কলকাতার যাদবপুর এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত মাওবাদী সংগঠনে কাজল, মহেশ ও নির্ভয় নামেও পরিচিত। প্রশান্তকে জেরা করে মাওবাদী সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। তবে সূত্রের খবর, সত্তরোর্ধ্ব অসুস্থ মাওবাদী নেতা এখনও সে ভাবে মুখ খোলেননি।

২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ওই বছরই ২৪ নভেম্বর জামবনির বুড়িশোলের জঙ্গলে যৌথ বাহিনীর গুলিতে শীর্ষ মাওবাদী নেতা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিসেনজির মৃত্যু হয়। তারপরে একে একে মাওবাদী ও জনসাধারণ কমিটির সদস্যরা আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের অনেকেই এখন রাজ্য সরকারের প্যাকেজ পেয়ে পুলিশে চাকরি করছেন। জঙ্গলমহলে এই এক দশকে শান্তি ফিরেছে। সন্ত্রাস, নাশকতা এখন অতীত।

কিছুদিন আগে অবশ্য শান্তিনিকেতন থেকে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন টিপু সুলতান নামে এক যুবক। পুলিশের দাবি, মাওবাদী তাত্ত্বিক নেতা টিপুকে জেরা করে জানা গিয়েছে, গণ সংগঠনের আড়ালে জঙ্গলমহলে নতুন করে মাওবাদীদের জনভিত্তি গড়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। অন্য দিকে, প্রাক্তন মাওবাদীদের পুলিশে নিয়োগের বিষয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা স্বরাষ্ট্র দফতরে বারে বারে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁদের মতে, আরক্ষা বাহিনীতে গণহারে প্রাক্তন মাওবাদীদের নিয়োগ করায় মাওবাদী-অভিযানে গোপনীয় তথ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি জেলার পুলিশ কর্তারা। একই সঙ্গে রাজ্য পুলিশের দাবি, শান্তি ও উন্নয়নমুখী জঙ্গলমহলে কোনও সমস্যা নেই। মাওবাদী তৎপরতার খবরও নেই।

তবে সুরক্ষায় ফাঁক রাখতে নারাজ পুলিশ। বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোর-সহ প্রত্যন্ত এলাকায় শীতের মরসুমে পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে। তাই এই সব জায়গায় বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। জেলার এক পুলিশ আধিকারিক বলছেন, ‘‘পর্যটকের বেশে কেউ অন্য উদ্দেশ্যেও আসতে পারে। তাই এমন পদক্ষেপ।’’ পাশাপাশি মানুষের ক্ষোভ, দাবি-দাওয়া জানতে বেলপাহাড়ির বিভিন্ন গ্রামে ‘দুয়ারে পুলিশ’ কর্মসূচিও
শুরু হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Maoist Leader Jhargram Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy